রাঙামাটি প্রতিনিধি : পার্বত্য ছাত্র ফোরাম রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষায় (২৪ সেপ্টেম্বর) বুধবার বিকেলে রাঙামাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এসময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মিছিল করে ছাত্র ফোরাম। কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের ভুমিতে তামাক চাষ সহ পরিবেশ ক্ষতিকারক কোন চাষাবাদ যেন করা না হয়।
সাধারণ ও সচেতন ছাত্র সমাজকে নিয়ে মাদক এর বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স সহ সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই পার্বত্য ছাত্র ফোরাম এর মুল লক্ষ্য।
উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো: হাবীব আজম, মিনহাজ মুরশিদ, পার্বত্য ছাত্র ফোরাম এর আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম তাজ এর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য ছাত্র ফোরামের রাঙামাটি জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মো: আলমগীর, পারভেজ মোশাররফ হোসেন, সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত বক্তাগণ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে তামাক চাষের কারণে কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কারণ এটি মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে নেয় এবং মাটির রাসায়নিক গঠন পরিবর্তন করে। তামাক চাষের জন্য বন উজাড় করে জমি পরিষ্কার করা হয়, যা স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে। এছাড়াও, তামাক চাষের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এবং উর্বর কৃষি জমি কমে যায়।
জমির উর্বরতা হ্রাস ও মাটির ক্ষতি
পুষ্টি শোষণ: তামাক গাছ মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান শোষণ করে, যার ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায় এবং তা অনুর্বর হয়ে পড়ে।
তামাক চাষে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মাটির স্বাভাবিক গঠন ও রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি সাধন করে। তামাক চাষে ঘন ঘন জমি চাষ করা হয়# এবং বন উজাড় করা হয়, যা মাটি ক্ষয়কে বাড়িয়ে তোলে। তামাক চাষের জন্য বন ও পাহাড় উজাড় করা হয়, যার ফলে জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে এবং অনেক প্রাণী তাদের বাসস্থান হারায়। খাদ্য শস্য চাষের জমি তামাক চাষে ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য শস্যের উৎপাদন কমে যায়, যা স্থানীয়ভাবে খাদ্য সংকট তৈরির আশঙ্কা তৈরি করে। তামাক শুকানোর জন্য বিপুল পরিমাণে কাঠ পোড়ানো হয়, যা বায়ুদূষণ ও বন উজাড়ের জন্য দায়ী। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, পৃথিবীর ২-৩% বন ধ্বংসের জন্য তামাক চাষ দায়ী।
এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলোর কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশের সুরক্ষার জন্য আইন করে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে তামাক চাষ বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি দেওয়া হয়, অন্যথায় আরো ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেয় পার্বত্য ছাত্র ফোরামের নেতৃবৃন্দ।