বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকার গৈদ্দারটেকে সম্প্রতি চাঁদাবাজি, ভূমি দখল এবং স্থানীয়ভাবে একাধিক অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং তাদের সন্ত্রাসী দলীয় সহযোগীরা রয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
চাঁদাবাজ ও ভূমি দস্যু দখলবাজদের হাত থেকে মুক্তি চেয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হকের কাছে গৈদ্দারটেক বাসী লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ লেখেন, একচ্ছত্র অধিপত্য ও রাজত্ব কায়েম করছেন বাবুল মিস্ত্রি গং,তারা এতোই বেপরোয়া ও ভয়ংকর যে তারা যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনা ঘটাতে পিছপা হয়না। এই বাবুল মিস্ত্রী দারুসসালাম থানা জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র যুগ্ম আহবায়ক, তার দাপটে এলাকার লোকজনের বসবাস করাও মুসকিল হয়ে পড়েছে।
এলাকার জনগণের দাবি, “বাবুল মিস্ত্রী” নামক ব্যক্তি এবং তার সহযোগী গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বাবুল মিস্ত্রী বর্তমানে দারুসসালাম থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বরত আছে, তার প্রভাবের কারণে স্থানীয়দের নিরাপত্তা ও জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, এবং বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
গৈদ্দারটেক এলাকার বাসিন্দারা আরও জানান, বাবুল মিস্ত্রীর ছোট ভাই বাতেন এবং তার ছেলে বাদল বর্তমানে স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। একাধিক স্থানে গাবতলী এবং গৈদ্দারটেক এলাকায় এই গ্রুপের সদস্যরা তাদের আধিপত্য বিস্তার করছে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা আদায় করছে। এলাকাবাসীর দাবি, তারা বাধা দিলে উল্টো তাদের উপর মিথ্যা মামলা দায়ের ও মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।
বাবুল মিস্ত্রির এই সব চাঁদাবাজি ও সব সন্ত্রাসী যাদের দারা পরিচালিত হয় তাদের মধ্যে অন্যতম আজাদ, শরিফুল ইসলাম সানি, বাতেন, রবিন হোসেন (রকি)। উল্লেখ্য থাকে যে, তারা সবাই উত্তরা পশ্চিম থানার ছাত্র হত্যা মামলার আসামী। (মামলার নম্বর ২৬) রবিন হোসেন ওরফে রকিঃ উত্তরা পশ্চিম থানার মামলা নাম্বার ২৬; তাং-১৯/০৯/২০২৪ ইং, আসামি নং-২৭। মিরপুর মডেল থানার মামলা নাম্বার ২৩(১)২৪, আসামি নং-৫৭। আজাদঃ উত্তরা পশ্চিম থানার মামলা নাম্বার ২৬; তাং-১৯/০৯/২০২৪ ইং, আসামি নং-২২৮। সানিঃ উত্তরা পশ্চিম থানার মামলা নাম্বার ২৬; তাং-১৯/০৯/২০২৪ ইং, আসামি নং-২২৫।বাতেনঃ তেজগাঁও থানার মামলা নাম্বার-০২; তারিখ-০৭/০৯/২০২ ৪, আসামি নং-১৬৩।। এদের মধ্যে রবিন হোসেন (রকি) তিন তিন বার মাদক মাসলার গ্রেফতার কৃত আসামী। যার মামলার এজাহারের কপি প্রমান স্বরূপ আমাদের হাতে আছে।
এ বিষয়ে বিএনপির ঢাকা-১৪ আসনের ২০১৮ সালের মনোনীত প্রার্থী এস.এ. সিদ্দিক সাজু মন্তব্য করে বলেন, “দলের নাম ভাঙিয়ে কোনোভাবেই এই ধরনের অপকর্মের সহায়তা দেওয়া যাবে না। যদি কোনো নেতা বা কর্মী দলের নামে অনৈতিক কাজ করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, “এমন পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অনুগত সমর্থক এবং তাদের রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী। তবে, দলীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি তাদের আবেদন, যাতে তারা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেন এবং স্থানীয় জনগণকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও চাঁদাবাজদের হাত থেকে মুক্তি দেন।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে, তা হলো, এই ঘটনায় প্রমাণ হিসেবে ছবির পাশাপাশি ভিডিও ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে প্রকাশ করা হতে পারে। স্থানীয় জনগণ জানিয়েছে যে, তারা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন।
এদিকে, সাবেক এমপি আসলামুল হকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রিথী নামের এক মহিলা নেত্রীরও অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং তার শাসনামলে বেশ কিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এলাকার জনগণ এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং আইনি সহায়তা চেয়েছে।