1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
মানবতার সেবায় অনন্য দৃষ্টান্ত গড়ছে ‘বিশ্ব গণমানুষ সেবা ফাউন্ডেশন’ ফায়ার সার্ভিসের ভলান্টিয়ারদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও প্রশিক্ষণের মান বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে কিছু দল: আমিনুল হক আমরা পুরান রাজনীতি পরিহার করে নতুন রাজনীতি করতে চাই, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু “খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের প্রতীক”— আবেগঘন স্ট্যাটাসে আসিফ আকবর দাউদকান্দিতে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল এশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক নেতৃত্বে তারেক রহমান—নেতাকর্মীদের দৃঢ় প্রত্যাশা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলের নাম চূড়ান্তভাবে পরিবর্তন ✦ এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে দেখতে পৌঁছেছেন ডা. জুবাইদা রহমান ✦ জুমার নামাজের পর খালেদা জিয়ার জন্য বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

মনের পশুরে করো জবাই; পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ২ জুন, ২০২৫
  • ১৪০ বার দেখা হয়েছে

-এইচ এম গোলাম কিবরিয়া রাকিব :                        মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতিবিজড়িত এক ইবাদতের নাম কোরবানি।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি (সূরা হাজ্ব; আয়াত-৩৪)।’ এরপর অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘অবশেষে যখন পিতা-পুত্র উভয়ে আল্লাহর কাছে নিজেদেরকে সোপর্দ করল এবং ইব্রাহিম তার পুত্রকে উপুড় করে শুইয়ে দিলেন জবেহ করার জন্য। আমি তাকে (ইসমাইল) মুক্ত করলাম এক কোরবানির বিনিময়ে। (সুরা সাফফাত আয়াত-১০৩ ও ১০৭)’

পিতা-পুত্রের সেই আত্মত্যাগ দয়াময় প্রভুর দরবারে এতটাই প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হয়েছিল যে, আল্লাহতায়ালা পরবর্তী সব উম্মতের মধ্যে তা স্মরণীয়-বরণীয় করে রাখলেন। কুরআনে বলা হয়েছে- আর আমরা ভবিষ্যতের উম্মতের মধ্যে ইব্রাহিমের (আ.)এই সুন্নাতকে স্মরণীয় করে রাখলাম। (সুরা সাফ্ফাত আয়াত-১০৮)।

কোরবানির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে, মনের পশু ও আমিত্বকে জবাই করা। তাইতো জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বলেছেন- “মনের পশুরে করো জবাই-পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই”। কিন্তু এ কাজটি করি আমরা কয়জন? সবাই তো পশু জবাইয়ে ব্যস্ত। এতে কোরবানির যে মূল উদ্দেশ্য তা থেকে সরে যাচ্ছি আমরা।

মহিমান্বিত এই ইবাদতটি আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হওয়ার অন্যতম শর্তই হচ্ছে তাকওয়া বা একনিষ্ঠতা। যার বর্ণনা পবিত্র কালামে পাকে এভাবে এসেছে- “আপনি তাদেরকে আদমের দুই পুত্রের ঘটনাটি ঠিকভাবে শুনিয়ে দিন তা হচ্ছে এই যে, যখন তারা দুজনে কোরবানি পেশ করল তখন তাদের একজনের কোরবানি কবুল হলো, অন্যজনের কোরবানি কবুল হল না”। তখন সে তার ভাইকে বলল, অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব। সে উত্তরে বললো, আল্লাহ তো মুত্তাকিনদের কোরবানিই কবুল করেন (সূরা মায়িদা আয়াত-২৭ ও ২৮)।’

কোরবানি গ্রহণ হওয়ার মূল উপাদান তাকওয়া বা খোদাভিরুতা।কুরআনে ইরশাদ করেছেন- “আল্লাহর দরবারে কোরবানির গোশত ও রক্ত কোনো কিছুই পৌঁছায় না, পৌঁছায় শুধু তোমাদের তাকওয়া” (সূরা হজ আয়াত-৩৭)।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কাছির (রাহ:) তার গ্রন্থে একটি সহিহ হাদিসের বর্ণনা করেছেন। রাসূল (সা.) বলেন- “আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদের দৈহিক রূপের দিকে দেখেন না এবং তোমাদের দিকেও তাকান না বরং দৃষ্টি থাকে তোমাদের অন্তরের ওপর ও আমলের ওপর”।

আমাদের সমাজে অনেকেই এমন আছি, যারা মোটা তাজা পশু কিনি লোক দেখানোর জন্য। বুক ফুলিয়ে, গর্ব করে, সেই কোরবানির পশুর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে থাকি পুলকিত মনে। এমনকি অনেকে তো মেসি, রোনালদো, নেইমার,জায়েদ খান, রাজাবাবু, সম্রাট,তাহেরী,মুক্তিযোদ্ধা আরো কত কি, ইত্যাদি নামের মোটা-তাজা গরু কেনাকে নিজেদের আভিজাত্য প্রকাশের মাধ্যম বলে মনে করি। এ ধরনের ছোট একটি মনোভাবই কোরবানি বিনষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। এই কোরবানি যে, ইবাদত নয় তা বলাই বাহুল্য। ইরশাদ হচ্ছে, “যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে (সুরা কাহফ-১১০)।”

‘গরুটা কিনে জিতেছি বা গরুটা কিনে ঠকেছি। গরুর দাম এত, মাংস হয়েছে এত কেজি। বড় গরু কোরবানি না দিলে ইজ্জত বাঁচবে না। সমাজে কতক কোরবানিদাতা আছি আমরা , যারা খোশগল্পের ছলে এ জাতীয় কথা অহরহ বলে থাকি। এ ধরনের অহেতুক কথা কোরবানির যথাযথ উদ্দেশ্যকে নষ্ট করে। কেননা কোরবানি আল্লাহর জন্য। যা লাভ-ক্ষতি, হিসাব-নিকাশ সব কিছুর ঊর্ধ্বে।

ঈদের দিন গরিব-দুঃখী মানুষ আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে সামান্য একটু গোশতের জন্য। পশুর চামড়া বা চামড়া বিক্রির সামান্য টাকার জন্য। এ ক্ষেত্রে অনেক কোরবানিদাতাকে দেখা যায়, তাদের সঙ্গে রুক্ষ আচরণ করে। কেউ কেউ আবার তাদের রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়। এ ধরনের গর্হিত কাজ প্রভুর দরবারে কোরবানির ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। ইরশাদ হচ্ছে, “এবং প্রার্থীকে ধমক দিবেন না” (সূরা আদ্ দুহা-১০)।

কোরবানির মাংস ও চামড়া বিক্রির অর্থ বিতরণে ইসলামের মূল আর্দশ হচ্ছে কোরবানিদাতা তার মাংস ও অর্থ গরিব দুঃখী ও অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে।

কিছু কোরবানিদাতা এমন রয়েছি, যারা হাসিলের টাকা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন কুটকৌশলের আশ্রয় নেই। হাটে পড়শির গরু কিনে, না কিনার ভান করে বাড়ি এসে টাকা পরিশোধ করেন। তাদের এ ধরনের কুটকৌশলে কোরবানি নষ্ট হয়ে যায়।

কোরবানির প্রতিটি পর্বে চাই তাকওয়ারপূর্ণ প্রতিফলন। পশু কেনা থেকে জবাই করা ও চামড়া বিক্রি করা, পশুর বর্জ অপসারণ আমাদের ই কর্তব্য। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রিতে সর্বোচ্চ মূল্য নিশ্চিত করা প্রভুর পক্ষ থেকে গরিব দুঃখীর আমানত। যার যথাযথ প্রাপ্তি নিশ্চিত, সংরক্ষণ ও প্রকৃত হকদারের কাছে পৌঁছে দেওয়া প্রত্যেক কোরবানিদাতার একান্ত কর্তব্য। ইরশাদ হচ্ছে- “আল্লাহতায়ালা নির্দেশ দিচ্ছেন আমানত তার প্রকৃত হকদারের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে”। (সূরা নিসা-৫৮)।

সমাজের কিছু বিত্তশালী, পেশিশক্তির মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা ঈদুল আজহা এলেই নিজেদের হীনস্বার্থে সিন্ডিকেট তৈরি করে চামড়ার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে। স্বল্পমূল্যে ক্রয় তিনগুণ মূল্যে বিক্রি করে নিজেদের পকেট ভারী করেন। এটি অসহায়দের হক নষ্টের অন্যতম কারণ। ইরশাদ হচ্ছে- “কেয়ামত দিবসে প্রত্যেক হকদারের হক আদায় করে দেয়া হবে, এমনকি শিংবিশিষ্ট ছাগল শিংবিহীন ছাগলকে মেরে থাকলে ওর প্রতিশোধ গ্রহণ করিয়ে দেয়া হবে।” (মুসলিম)

অনেক কোরবানিদাতা আছি , যারা পশুর বর্জ্য ঠিকভাবে পরিষ্কার করি না। এ কারণে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, ফলে পরিবেশ দূষণের মতো ইসলামের আর্দশ বিবর্জিত এ কাজ হয়। কষ্ট পায় মানুষ। মালিক অখুশি হন। হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে- “প্রকৃত মুসলিম তো ওই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ তথা কর্ম ও কথায় অপর মুসলমান কষ্ট পায় না”।

আল্লাহ আমাদের কোরবানি বিষয়ক কাজগুলো তাকওয়া ও একনিষ্ঠভাবে করার তৌফিক দান করুন।আমিন।

এইচ এম গোলাম কিবরিয়া রাকিব

প্রতিষ্ঠাতা- কুমিল্লা জিলা মাদরাসা

খতিব, মানবাধিকার কর্মী, টিভি উপস্থাপক।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com