1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আইনশৃঙ্খলা উপদেষ্টা পরিষদের ১৮তম সভা নির্বাচন, ডেভিল হান্ট ফেইজ-২, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিনাজপুরের বীরগঞ্জে হিন্দু কৃষকের ১২একর ধানের পালায় অগ্নিসংযোগ: নিঃস্ব দুই পরিবার। শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারী ফয়সালের অবস্থান নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি বজ্রপাতের ঝুঁকি কমাতে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থায় কমিউনিটির সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আহ্বান অতীতের মতো দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে রক্ষা করবে বিএনপি: তারেক রহমান শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে লোগাংয়ে অসহায়দের মাঝে বিজিবির শীতবস্ত্র বিতরণ নির্বাচন ঘিরে এখন থেকে অভিযান চালাবে যৌথ বাহিনী *টানা ষষ্ঠবার ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেল বসুন্ধরা এলপি গ্যাস* *বিওয়াইডি বাংলাদেশের ‘ইউথ অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রোগ্রাম ২০২৫’ এর প্রথম দফা সফলভাবে সম্পন্ন*

৩ দিনের শিশুকে বিক্রি করে গুলিবিদ্ধ স্বামীর চিকিৎসা করাচ্ছেন রোকেয়া

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১২৮ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: গত ৪ আগস্ট দুপুরে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপ করাতে গিয়েছিলেন জেলার কাটাপাড়া এলাকার দিনমজুর আব্দুর রশিদ। স্ত্রীকে গাইনি ওয়ার্ডে রেখে নিচে এসে টিকিট কাটছিলেন। এমন সময় হাসপাতালের অভ্যন্তরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হন আব্দুর রশিদ। তার পেটে, নাভিতে, পায়ে এবং প্রস্রাবের রাস্তায় গুলি লাগে। পরে ওই হাসপাতালেই তাকে ভর্তি করা হয়, নেন চিকিৎসাও। কিন্তু হামলা-মামলার ভয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি চলে যান আব্দুর রশিদ।

৩ দিন পর তার পেটে গুলিবিদ্ধ স্থানে পচন ধরলে ৮ আগস্ট তিনি দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতেই হয় অস্ত্রোপচার, এরপর আইসিইউতে। পরের দিন বাড়িতেই ফুটফুটে এক মেয়ে জন্ম দেন আব্দুর রশিদের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। হাসপাতালে চিকিৎসা চললেও অনেক ওষুধ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামাদিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আব্দুর রশিদের বিল আসে ৩৬ হাজার টাকা। যা দিনমজুর রশিদের পরিবারের জন্য অনেক বেশি। কারণ আব্দুর রশিদ এমন একজন মানুষ, যার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই। থাকেন অন্যের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে। এই অবস্থায় উপায় না পেয়ে হাসপাতালের টাকা পরিশোধ করতে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের ৩ দিনের শিশু মেয়েকে অন্যকে দিয়ে দেন আব্দুর রশিদের স্ত্রী রোকেয়া।

আব্দুর রশিদের অবস্থা এখনও পুরোপুরি ভালো নয়, তার শরীরে আরও গুলি রয়েছে। একটি পিলেট বা গুলি রয়েছে তার প্রস্রাবের রাস্তায়। ডান পায়ের উরুর উপরে রয়েছে আরও তিনটি গুলি। এছাড়াও হাতে ও পেটে আরও পিলেট বা গুলি রয়েছে বলে জানিয়েছেন আব্দুর রশিদ। প্রতিদিন ওষুধ লাগছে, প্রস্রাবের জন্য ড্রেন করে দেওয়া হয়েছে নাভি দিয়ে। সেই থলিও বদলাতে হয় কয়েকদিন পর পর। এরপর রয়েছে তার বড় সন্তান, তার দাদা-দাদি ও তার স্ত্রীর খাবার। সবমিলিয়ে এক অসহায় পরিবার। চিকিৎসক তাকে জানিয়েছে, তার শরীরে আরও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। ফলে সন্তানকে বিক্রি করেও দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়েনি তার।

নবজাতকের মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর আমার স্বামীর শরীরে গুলি লাগে। পরে ওই হাসপাতালে আমার স্বামীর চিকিৎসা হয়। চিকিৎসা শেষে স্বামীসহ আমি বাড়িতে চলে আসি। এরপর ৮ তারিখে আমার স্বামীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে অপারেশন হয় আর পরদিন আমার মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। আমার আরেকটি সন্তান রয়েছে, সেটিও মেয়ে। আমার স্বামীর অপারেশনের জন্য বিভিন্ন ওষুধ ও জিনিসপত্র কিনতে হয়। ৩ দিনে হাসপাতাল থেকে যেসব ওষুধ ও জিনিসপত্র দিয়েছে তা ছাড়াও আমাদের খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৬ হাজার টাকা। এজন্য আমি ২৫ হাজার টাকায় আমার নবজাতককে এক দম্পতির হাতে তুলে দেই। চিকিৎসক জানিয়েছে, আমার স্বামীর আরও অপারেশন করতে হবে। কিন্তু তিনি পুরোপুরি সুস্থও হতে পারবেন না।’

নবজাতকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার তো খারাপ লাগছেই। কিন্তু স্বামীকেও বাঁচাতে হবে। চিকিৎসক জানিয়েছে, আমার স্বামী আর স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারবেন না। এখন দুটি মেয়েকে নিয়েও চিন্তা রয়েছে। একটি মেয়ে আমার কাছে আছে, আরেকটি মেয়ে অন্যের কাছে। তারা নাকি আমার মেয়েকে মানুষ করবে, বড় করবে, পড়ালেখা শেখাবে।

গুলিবিদ্ধ আহত আব্দুর রশিদ বলেন, ‘‘আমার দিনাজপুরে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। অন্যের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তানসহ থাকি। আমার বাড়ি পঞ্চগড়ের ভজনপুরে। সেখানে আমার সৎ মা ও দুই ভাই রয়েছে। বাবার জমিও নেই। গুলিবিদ্ধের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো অপরাধ ছিল না, স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর আমার শরীরে গুলি লাগে। কিন্তু এখন আমাকে যন্ত্রণা নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। আমার অসুস্থ স্ত্রী আমার সেবাযত্ন করছে। আমাকে বলেছে, ‘যদি বাচ্চাটাকে নিয়ে আসি তাহলে তোমার সেবাযত্ন ঠিকভাবে করতে পারব না।’ আমার প্রতিনিয়তই হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, যেসব ওষুধ পাচ্ছি সেগুলো ছাড়াও বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অনেকে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু আমার আরও অপারেশন করা লাগবে, আমি আমার স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাঁচতে চাই, সুস্থ হতে চাই।’’

দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ‘তাদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের দেওয়া যেসব ওষুধ ও সরঞ্জামাদি সাপ্লাই রয়েছে, সেসব আমরা দিচ্ছি। আর যেসব নেই সেগুলো লিখে দেওয়া হচ্ছে।’

হাসপাতালটির পরিচালক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ১৮২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অনেকেই এখনও ভর্তি রয়েছেন, বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে গেছেন। যে কোনো ধরনের সমস্যায় আমরা পরামর্শ দিয়েছি।

দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান বলেন, আমরা বাচ্চাটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com