দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : দেবিদ্বারে উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ থেকে এক শিশু রোগিকে আক্তার হোসেন নামে এক দালাল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে, বাঁধা দিতে আসা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মচারী লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে।
প্রত্যক্ষ দর্শিরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় ৯/১০ বছরের একটি ছেলে বাচ্চা রোগিকে তার মা জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাছলিমা আক্তার রোগির অবস্থা দেখে বললেন, দুই হাত পচনের পরিমান বেশী হলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এসময় ইন্টার্নিশীপে কাজ করা এটেন্ডেন্ট বাছির উদ্দিনকে দু’হাতের ব্যান্ডেজ খুলে দেখার জন্য বলেন। বাছির ব্যান্ডেজ খুলতে গেলে, দালাল আক্তার তাকে ঘুষি মারতে যায় এবং ব্যান্ডেজ খুলতে নিষেধ করে জোরপূর্বক রোগি নিয়ে যেতে চাইলে এসএসিএমও (সাকমো) ডাঃ মো. মিজানুর রহমান এসে বাঁধা দেন। এসময় দু’জনের মধ্যে চেয়ার উঠিয়ে এবং হাতাহাতি ও বাকবিতন্ডা শুরু হলে উপস্থিত লোকজন আক্তারকে জরুরী বিভাগ থেকে বের করে দেয়। বাহিরে এসে আবারো সাকমো ডা. মো. মিজানুর রহমানের উপর চড়াউ হয়।
এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মো. কবির হোসেন আক্তারকে ডেকে বিষয়টা জানতে চাইলে দালাল আক্তার (আরএমও) ডাঃ মো. কবির হোসেনকে সরে যেতে বলে ধাক্কাতে ধাক্কাতে লাঞ্ছিত করে।
সংবাদ পেয়ে দেবিদ্বার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিশন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসলে আক্তার হোসেন পালিয়ে যায়। আক্তার হোসেন পৌর এলাকার ছোট আলমপুর গ্রামের রুহুল আমিনের পুত্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক চিকিৎসক, কর্মচারি ক্ষোভের সাথে বলেন, আমরা প্রতিদিন প্রতি মুহুর্তে দালাল চক্রের অত্যাটারে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। দেবিদ্বার ৩৮টি প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়গনেস্টিক সেন্টার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শতাধিক দালাল রয়েছে। রাতদিন ২৪ ঘন্টাই এদের উপস্থিতি হাসপাতাল ঘিরে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কয়েকটির মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় ওইসব প্রতিষ্ঠানের দালাল চক্র কাউকেই সমিহ করেনা। আক্তার হোসেনসহ একটি চক্র দির্ঘদিন যাবত হাসপাতালে আসা রোগিদের জোরকরে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা- নিরীক্ষাসহ ব্যবস্থা পত্রের ঔষধ ক্রয়ে সর্বশান্ত করে আসছে। এ ছাড়াও হাসপাতালের রোগিদের টাকা, মোবাইলসহ মালামাল চুরির অভিযোগই নয় ওই চক্রের বিরুদ্ধে ইভটিজিং এরও অভিযোগ রয়েছে।
তারা আরো জানান, গত ১৫ দিন পূর্বে এরকম ঘটনায় বাঁধা দেয়ায় আক্তর হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী আহসান বিজয়কে লাঞ্ছিত করে। ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে পাঠালেও দু’দিন পর একটি প্রভাবশালী চক্রের সহযোগীতায় আবারো ছাড়াপেয়ে এসেছে।
এ ব্যপারে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মঞ্জুর হোসেন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী আহসান বর্তমানে ঢাকায় আছেন, উনি আসলেই আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত।