মোহাম্মদ আলী হাজারী : জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (নিকডু) শিক্ষক সমিতির আয়োজনে একটি জার্নাল (JNIKDU) ও শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্রের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সদ্য উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী এবং পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
সোমবার দুপুর ১২টায় নিকডু অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী।
শুরুতেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পাশাপাশি মহান স্বাধীনতার ঘোষক, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের জনক শহীদ রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ এবং সদ্য শাহাদাতবরণকারী শহীদ ওসমান হাদীসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর আরেফিন রুবেল। সঞ্চালনায় ছিলেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহরিয়ার মো. কবির হাসান (পল্লব)।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলফা সানি, শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ নেওয়াজ দেওয়ান, ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শওকত আলম, নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আনম এহসানুল করিম, ট্রান্সপ্লান্ট ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ফজল নাসের, শিশু ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইসলাম, শিশু নেফ্রোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. কবির আলম, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. তানভীর আলম, রেডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাহমিনা ইসলাম এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোরশেদ আলম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. হাসিবুর রহমান, সহকারী পরিচালক ডা. মাসুদ পারভেজ, আবাসিক সার্জন ডা. সানাউল্লাহ সানু, ডা. শেখ আমিরুল ইসলাম, আবাসিক চিকিৎসক ডা. সৈয়দ রানা কবির, ডা. রাশেদুল ইসলামসহ সর্বস্তরের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ।
স্বাগত বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ নেওয়াজ দেওয়ান ৫ আগস্ট-পরবর্তী শিক্ষক সমিতি গঠনের প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর আন্তরিক উদ্যোগেই নিকডুর পথচলা শুরু হয়েছিল। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের জানুয়ারি ও জুলাই সেশনের দুটি জার্নাল এবং শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্রের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পরে ২০ জন সদ্য উচ্চতর ডিগ্রি (এফসিপিএস, এমএস ও এমডি) অর্জনকারী এবং ৪২ জন পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসককে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
বক্তারা বলেন, নিকডু বর্তমানে চিকিৎসা সেবায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রতিদিন নিয়মিত ৬টি অপারেশন থিয়েটারে শৈল্য চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত সফলভাবে ৪৪টি কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। শুধু গত এক মাসেই প্রায় পাঁচটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজারের বেশি রোগী নিয়মিত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলফা সানি তার বক্তব্যে বলেন, “হাসপাতালকে এগিয়ে নিতে সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে। চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতি আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে—এ বিষয়ে আমি আশাবাদী।”
সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর আরেফিন রুবেল বলেন, “নিকডু ভবিষ্যতে একটি আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুব শিগগিরই নিকডু একটি ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’-এ রূপ নেবে।”
শেষে তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।