আবুল হাসনাত তুহিন ফেনী:- গল্পে বাচ্ছারা কুয়ায় ব্যাঙকে ঢিল ছুঁড়তে থাকলে ব্যাঙ আর্তনাদ করে বলছিল,”ওহে বাচ্ছারা তোমাদের খেলা আমাদের মরন ডেকে আনছে”।
ঠিক তেমনি সোনাগাজী উপজেলার মোতিগঞ্জ ইউনিয়নের চর এলাহি গ্ৰামের জাবেদ আলী মিয়া বাড়ীর বাসিন্দারা সহ আশেপাশের শতাধিক পরিবারের মানুষের অবস্থা ।
প্রায় ১৪ বছর আগে উক্ত বাড়ীর মোঃ নুরুল হক (৫০) ও তদীয় পুত্র মো এনামুল হক সুমন ও মো আব্দুল জব্বার একটি মুরগীর খামার স্থাপন করে।খামারটির অবস্থান বাড়ীর সর্ব দক্ষিণে।ফলে ২/৪ মাসের মধ্যে বাড়ীর উত্তর পাশে বসবাসকারী ১২টি পরিবারের ৩০/৪০ জন নারী শিশু বৃদ্ধ সহ সকলের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। এছাড়াও আশপাশের শতাধিক পরিবার পরিবেশ দূষণের প্রত্যক্ষ শিকার।
গতকাল রোববার সকালে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বহুলোক এসে জড়ো হয়ে খামার মালিকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।
এরমধ্যে ছিলেন, স্থানীয় মেম্বার,সমাজ কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারী, মসজিদের ইমাম অনেক গন্যমান্য ব্যক্তি।
এই বিশাল খামারটির পঁচাগলা,মুরগীর বিষ্ঠা, যত্রতত্র মৃত মুরগী ফেলে রেখে পরিবেশ এমন বিষাক্ত করে ফেলেছে যে,খামারের আশপাশের সবকটি পুকুর,ডোবার পানি স্রেপ তরল বিষে পরিনত হয়েছে।নারী শিশু সহ সবাই অপুষ্টি, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এনিয়ে স্থানীয় ভাবে শালিশ দরবার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর বহু আবেদন নিবেদন করেছেন তাদেরকে রক্ষা করতে, জীব বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। সোনাগাজী উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নেবু লাল দত্ত গত ২৬.০৬.২৪ ইং তারিখে একটি নোটিশের মাধ্যমে জানান যে, যত্রতত্র মুরগীর বিষ্ঠা এবং বর্জ্য ফেলার কারনে পানির সাথে মিশে সেসব আশপাশের ফসলি জমি, পুকুরের পানি নষ্ট করছে। তাছাড়া খামারটি প্রানী সম্পদ বিভাগ কর্তৃক নিবন্ধিত নয় বিধায় পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে খামার বন্ধ করে দেয়ার আদেশ দেন,নতুবা আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। কিন্তু তারপর সে আদেশের কোন কার্যকারিতা নেই।
এব্যাপারে খামার মালিক নুরুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কথা বলেননি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমার সাথে যোগাযোগ করলে তি বলেন,”কোন বসত বাড়ীতে ব্যবসায়ীক ভিত্তিতে পোল্ট্রি খামার করার সুযোগ নেই।এটা সম্পূর্ণ বেআইনী।তিনি অভিযোগ পেয়েছেন এবং দ্রুত তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্ৰহন করা হবে” বলে জানান।
খামার মালিক নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক বলে ধরাকে সরা জ্ঞান করেছে। দেশের পটপরিবর্তনের পর সেও পল্টি দিয়েছে।এখন রাতারাতি সে বিএনপি নেতাবনে গেছে। ফলে উপায়ান্তর না পেয়ে বাড়ীর বাসিন্দারা সব একেএকে বাড়ী ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই চারটি পরিবার নিজেদের বসত ভিটা ছেড়ে চলে গেছেন।