বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফের বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার এ হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, ফিলিস্তিন থেকে আগুন বেলুন ছোঁড়ার পাল্টা জবাবে হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের আক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করে হামাসের মুখপাত্র বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের সাহসী প্রতিরোধ চালিয়ে যাবে এবং জেরুজালেমের ওপর তাদের অধিকার ও পবিত্র স্থানগুলো রক্ষা করবে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা সীমান্ত থেকে অন্তত ২০টি আগুন বেলুন ছোড়া হয় ইসরায়েলে। প্রতিবাদে এ হামলা চালায় তারা। দখলদার বাহিনীর দাবি, হামাসকে লক্ষ্য করে তারা এ হামলাটি চালিয়েছে। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, গাজা সিটি এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে হামাসের সশস্ত্র স্থাপনায় হামলা করেছে তাদের যুদ্ধবিমান। তারা সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছে, গাজার ধারাবাহিক হামলা নস্যাৎ করতে প্রয়োজনে আবারও লড়াই শুরু করা হবে।
ইসরায়েল ও হামাসের টানা ১১ দিনের সংঘাতের পর গত ২১ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ওই সংঘাতে প্রায় ২৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এর মধ্যে ৬৬ জনই শিশু। অপরদিকে দুই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলে রকেট হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছে। তবে হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক।
ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের গাজা উপত্যকার প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার সম্প্রতি বলেছেন, ২০০৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত ইহুদিবাদী ইসরায়েল গাজার ওপর যে অবরোধ দিয়ে রেখেছে তা খুব শিগগিরই ভেঙে পড়বে এবং ফিলিস্তিনি নাগরিকরা উপযুক্ত পরিবেশে বসবাস করতে পারবে। গাজা সফররত মিশরের একটি প্রতিনিধিদলকে সিনওয়ার একথা বলেন।
২০০৬ সালে ফিলিস্তিনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হামাস ক্ষমতায় এলে ক্ষুব্ধ হয়ে ইহুদিবাদী ইসরায়েল গাজা উপত্যকার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে। এর ফলে গাজার জনগণ বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান একেবারেই নেমে গেছে।
মিশরীয় প্রতিনিধিদলকে ইয়াহিয়া সিনওয়ার আরও বলেন, সাম্প্রতিক গাজা যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক মতামত সম্পূর্ণভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে হামাস সব উপায় ব্যবহার করবে।
গাজার সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইসরায়েল ব্যাপকভাবে বিমান হামলা চালায় এবং গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে। কিন্তু হামাস ও ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের রকেট হামলার মুখে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি করতে বাধ্য হয়। এ বিষয়টিকে গাজার প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো বিজয় হিসেবে দেখছে। এছাড়া, ইসরায়েলের রাজনীতিতেও এটি বড় প্রভাব ফেলেছে।