প্রতিবেদক: কাজল | ঢাকা, ২৩ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নকে শক্তিশালী করতে দেশের প্রতিটি জমি কাজে লাগানো হবে। পতিত বা অচাষযোগ্য মনে হওয়া জমিও আবাদে নিয়ে আসা হবে। দেশের ৬৮ হাজার গ্রামের কৃষক ভাইয়েরা একসাথে মাঠে কাজ করলে খাদ্য ঘাটতি দূর হবে, কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে, ভোক্তা ও সাধারণ জনগণ স্বস্তি পাবে, শহর-গ্রাম সবার হাতের নাগালে সঠিক মূল্যে শাকসবজি, ধান, পাট, আলু, ভুট্টা, ফল ও মসলা পৌঁছাবে। কৃষকরা জমি আবাদে ব্যবহার করলে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে — প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক, আধুনিক যন্ত্রপাতি, সেচ, উন্নত জাতের বীজ, প্রশিক্ষণ। জমি ও ফসলের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। কৃষক উৎপাদন খরচ মেটাতে পারবে, লাভ হবে, সারা দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বস্তি ফিরে পাবে। স্বাধীনভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারবে — কারণ খাদ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাই জীবনের স্বাধীনতা।
দেশের বাজারে পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী বা মজুতদারি ও দাম ইচ্ছামতো বাড়ানো বন্ধ করতে হবে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হবে, ক্রেতা স্বস্তিতে পণ্য কিনবে। দেশের সকল ব্যবসায়ীকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ন্যায্যভাবে কাজ করতে হবে, আইন অনুযায়ী সকল নিয়ন্ত্রণের আওতায় থাকবে। প্রয়োজনীয় সার ও যন্ত্রপাতি: ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, ডিএপি, জিপসাম, জিঙ্কসহ ক্ষুদ্রপুষ্টি উপাদান, জৈব সার, বীজ শোধক, কীটনাশক, ফাঙ্গিসাইড, আগাছানাশক; জমি চাষে ট্র্যাক্টর, পাওয়ার টিলার, ধান রোপণ যন্ত্র, সেচের পাম্প, স্প্রে যন্ত্র, সার ছড়ানোর যন্ত্র, মাটি যন্ত্র, ধান মাড়াই যন্ত্র, সমন্বিত ফসল কর্তন যন্ত্র, শুকানোর যন্ত্র, ঠাণ্ডা সংরক্ষণাগার, পরিবহণের বিশেষ যানবাহন।
মৌসুমি সময়সূচি: ধান-আউশ: বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ, ভাদ্র-আশ্বিন; আমন: আষাঢ়-শ্রাবণ, কাটাই অগ্রহায়ণ-পৌষ; বোরো: অগ্রহায়ণ-পৌষ, কাটাই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ; গম-রোপণ: অগ্রহায়ণ-পৌষ, কাটাই চৈত্র-বৈশাখ; পাট-বপন: চৈত্র-বৈশাখ, কাটাই শ্রাবণ-ভাদ্র; আলু: কার্তিক-অগ্রহায়ণ, উত্তোলন মাঘ-ফাল্গুন; ভুট্টা: কার্তিক-পৌষ, কাটাই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ; শীতসবজি-রোপণ: অগ্রহায়ণ-পৌষ, বাজারে মাঘ-চৈত্র (বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, মটর, গাজর, টমেটো, পালং); গ্রীষ্ম-বর্ষা সবজি-রোপণ: চৈত্র-জ্যৈষ্ঠ, বাজারে আষাঢ়-আশ্বিন (বেগুন, ঢেঁড়শ, করলা, ঝিঙে, লাউ, কুমড়া, শসা, পটল); বারোমাসি: লালশাক, কলমি, পুঁই, ধনে, কচুশাক, লাউ-ঢেঁড়শ; ফল: আম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, পেয়ারা, আনারস, কলা, বড়ই, কমলা; মসলা: মরিচ, হলুদ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ।
বাজারশৃঙ্খলা ও পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী দমন: কাঁচাবাজারে কৃত্রিম সংকট, মজুতদারি, দাম ইচ্ছামতো বৃদ্ধি বন্ধ; ঠাণ্ডা সংরক্ষণাগারে কারসাজি ও অশুদ্ধ ওজন দমন; পাইকারি-খুচরা স্তরে মূল্য তথ্য, অনুসরণযোগ্যতা ও নজরদারি; কৃষক সমবায়, ডিজিটাল হাট, সরাসরি চুক্তিচাষ সম্প্রসারিত হবে। কৃষকের লাভ নিশ্চিত: উৎপাদন খরচভিত্তিক ন্যূনতম মূল্যনীতি, স্বল্পসুদ কৃষিঋণ ও ফসলবীমা, মাটি পরীক্ষা অনুযায়ী ডোজ চার্ট, সাশ্রয়ী সেচ, বিষমুক্ত বা জৈব উৎপাদনে প্রশিক্ষণ, মান নির্ধারণ, প্যাকিং ও ঠাণ্ডা সংরক্ষণ ব্যবস্থার জোরদারকরণ, রপ্তানি যোগ্য মান নিয়ন্ত্রণ।
দায়িত্ব ও সমন্বয়: কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি বিপণন, পানি উন্নয়ন, স্থানীয় প্রশাসন, অর্থ-বাণিজ্য-শিল্প, সড়ক ও রেলপথ, তথ্যপ্রযুক্তি — সবই একত্রে কাজ করবে। যার দায়িত্ব, সে নির্ভুলভাবে, সময়মতো, জবাবদিহিসহ পালন করবে। জনঅংশগ্রহণের আহ্বান: দেশের জনগণ, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষক — সবাই একসাথে কাজ করবে। অনিয়ম, পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী বা বাজার বৈষম্য দেখা দিলে তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে ন্যায্যমূল্যের সংস্কৃতি গড়ে তোলা হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, সবার হাতে খাদ্য ও স্বস্তি ফিরবে।
বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম, খেত, ফসল — একদিন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করবে। কৃষি শক্তিশালী হলে জাতির অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। সকলকে আহ্বান — সবার সমন্বিত উদ্যোগ, সহযোগিতা ও ন্যায়সংগত অংশগ্রহণই দেশের শত বছরের উন্নতির ভিত গড়বে।