নিজস্ব প্রতিবেদক : নাসিরনগরে আপন মেম্বার নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল বিক্রয়ের কথা বলে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর এমন একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী মামুন মিয়া।
প্রতারক আপন মেম্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাস্থ সরাইল থানাধীন দেওড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র।
অভিযোগ পত্রের বিষয়টি হুবহো তুলে ধরা হলো, যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী মামুন মিয়া, পিতা- আবুল হোসেন, সাং- ভুবন মাদ্রাসা, ডাকঘর- ভুবন মাদ্রাসা, থানা- নাসিরনগর, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া। অদ্য আপনার কার্যালয়ে হাজির হইয়া এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, ১ নং আসামী আপন মেম্বার আমার পূর্ব পরিচিত হয় বটে। ১ নং আসামী আপন মেম্বার ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনার স্থান আমার দোকানে গিয়ে একটি কালো রঙয়ের বাজাজ পালসার ১৫০ সিসি মোটর সাইকেল স্টার্টে সমস্যা হয়েছে বলিয়া আমাকে মটর সাইকেলটি রাখতে বলে এবং আগামী কালকে এসে সে নিয়ে যাবে বলে। আমি তাকে বিশ্বাস করিয়া উক্ত মটর সাইকেলখানা আমার দোকানে রাখি। তাহার সাথে ২নং আসামী ও অজ্ঞাতনামা আরো ০১ (এক) জন ছিল। এমতাবস্থায় আমার দোকানে মোটর সাইকেলটি রেখে আমার কাছ থেকে ১৫,০০০/- (পনের হাজার) টাকা কর্ষ নেয়। পরবর্তীতে আপন মেম্বার আমাকে ফোনে বলে যে, উক্ত মোটর সাইকেলটি সে বিক্রি করিয়া দিবে এবং আমাকে তার জন্য কাস্টমার খোজ করতে বলে। তখন আমি তাকে বলি যে গাড়ির কাগজপত্র দিলে আমি ক্রয় করতে রাজি আছি। এর পর আপন মেম্বার গত ২০/০৪/২০২৫ ইং তারিখে আমার দোকানে আসে এবং বলে যে কাগজ পত্র আমি রেডি করতেছি আপনি টাকা রেডি করেন। তখন গাড়ির মূল্য বাবদ ৫৫,০০০/- টাকা নির্ধারন করা হয়, যেহেতু পূর্বে ১৫,০০০/- টাকা দিয়েছি তাই এখন ৪০,০০০/- টাকা দিতে হবে। তখন আমি বলি যে আমার টাকা রেডি আছে আপনি গাড়ির কাগজ নিয়ে আসেন। ততপর ঐ দিনই আপন মেম্বার গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে আমার দোকানে আসে এবং বলে যে, গাড়ির ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত স্ট্যাম্প লিখতে হবে, আমাকে টাকা দেন। তখন আমি বাকী ৪০,০০০/- টাকা তাকে নগদ স্বাক্ষীগণের সম্মুখে প্রদান করি। অতঃপর আপন মেম্বার আমার কাছ থেকে টাকা এবং সাথে আমার কাছে থাকা উক্ত পালসার মোটরসাইকেলটি নিয়ে স্ট্যাম্প লিখতে যায়। তার পর থেকে সে আর ফিরে আসেনি। আমি তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ঐ দিন তার ফোন বন্ধ পাই। পরবর্তী দিনে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে যে বলে যে, কিসের টাকা, তোমার কাছে কোন গাড়ি বিক্রি করিনাই, তুমাকে এই গাড়ি দিব না, আমার কাছে আরো গাড়ি আছে, তোমাকে অন্য গাড়ি দিব এই বলে তালবাহানা করতে থাকে। আমি টাকা ফেরত চাইলে সে বলে যে, বোশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে আমি হত্যা করে ফেলব। এই বলিয়া নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয়।
অতএব, মহোদয় সমীপে আমার আকুল আবেদন এই যে, উপরোক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে আপনার সদয় মর্জি হয়।
এ ব্যাপারে ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রতারক আপন মেম্বারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ভূক্তভোগী মামুন মিয়া বলেন, আমি সরল বিশ্বাসে আপন মেম্বারকে টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছিলাম। সে আমার সাথে প্রতারণা করে টাকা এবং মোটরসাইকেল দুটোই নিয়ে গেছে। সামাজিক ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত ২৬/০৪/২০২৫ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপারের বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছি। এখনো কোন সমাধান পাইনি। আমি ওই প্রতারকের বিচার দাবি করছি।