বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : অতীতের মতোই বাংলাদেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে রক্ষা করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, সামনে কঠিন সময় আসছে—এই সময় মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “অতীতেও বিএনপি দেশকে ধ্বংসের কিনারা থেকে রক্ষা করেছে, এবারও করবে। তবে সামনে কঠিন সময় আসছে। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বক্তব্যের শুরুতেই গুলিতে নিহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ ওসমান হাদির স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “ওসমান হাদি ছিলেন গণতন্ত্রের পথের মানুষ। তিনি ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন এবং আগামী নির্বাচনের একজন প্রার্থী ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদি, জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও যোদ্ধা এবং একাত্তরের শহীদদের প্রতি প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে আমাদের একটাই লক্ষ্য হতে হবে—দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়া।”
তিনি বলেন, দেশ এখন স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত। এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা মূলত এই প্রজন্মের তরুণ। এই প্রজন্মের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তবে ইন্টারনেট এখনো ব্যয়বহুল, যা অনেকের জন্য সহজলভ্য নয়।
ইন্টারনেট সুবিধা তরুণদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণের সমর্থনে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে ইন্টারনেট সেবা আরও সহজ ও সাশ্রয়ী করা হবে। আজ আজিজুল হক কলেজে যে ফ্রি ইন্টারনেট কানেকশন চালু করা হয়েছে, সেটি তার একটি উদাহরণ।”
এ সময় দেশের আইটি পার্কগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলে জনগণের অর্থ অপচয় করে যে ডিজিটাল পার্কগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই কার্যত বন্ধ। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এসব আইটি পার্ক রিফারবিশ করা হবে।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ নারী স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন।
বিদেশে কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তরুণদের ভাষা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।
বক্তব্যের শেষাংশে বিএনপির ৩১ দফা এবং নতুন স্লোগানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মূল কাজ একটাই—করবো কাজ, গড়বো দেশ; সবার আগে বাংলাদেশ।”
অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি জিয়াউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।