মামুনুর রশীদ : কুমিল্লা জেলাস্থ দেবিদ্বারের কৃতি সন্তান, মৃত্তিকা বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ড. জেসমিন পারভীন (সীমা) পাঠান প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার প্রতিটি স্তরে স্কলারশীপ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স এ কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ইউজিসি এর স্কলারশীপ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন ২২ তম বিসিএস এর এই কর্মকর্তা।
তিনি বর্তমানে সরকারি বাংলা কলেজে একই পদে পদায়ন হয়েছেন। ৬ আগস্ট বুধবার শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর (মাউস)’র মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদ থেকে সরকারি বাংলা কলেজে একই পদে পদায়ন করা হয়।
দেবিদ্বার পাঠান বাড়ির মরহুম ইউনুস পাঠানের কন্যা, আনোয়ার হোসেন ভুলু পাঠানের ছোট বোন এবং ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, মিরপুর শাখার এসএভিপি ও ম্যানেজার অপারেশন বনকুট মুন্সি বাড়ির মো: আব্দুস সালাম মুন্সীর স্ত্রী ড. জেসমিন পারভীন শুধু একজন শিক্ষাবিদই নন, তিনি একজন মানবিক মানুষ, যিনি নিজের জীবনের সংগ্রামকে অন্যের প্রেরণায় রূপ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
এক সময় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি নিজেই। ঢাকা, ভারতের মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল, ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে চলা, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ এবং সাহসকে সঙ্গী করে জয় করেছেন মরণব্যাধি। এই জয় তাকে শিখিয়েছে জীবনের মূল্য, আর সেই শিক্ষা থেকেই জন্ম নিয়েছে অন্যের জন্য কিছু করার প্রেরণা।
সেই সাথে একজন মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসেবে কীটনাশক বিহীন নিরাপদ ফসল উৎপাদন ও পদ্ধতিগুলো শেয়ার করার লক্ষ্যে ছাদ ও বারান্দায় বাগান গড়ে তুলেছেন। তার এ সফল অনুকরণীয় উদ্যোগ দেশের শীর্ষস্থানীয় ৮/১০টি টিভি চ্যানালে প্রচারিত হয়েছে।
তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে ক্যান্সার সচেতনতায় সভা-সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মানুষকে সাহস জোগান এবং অসহায় রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। জনগনের জন্য তাঁর বক্তব্য হলো ক্যান্সার হলে ভয় পাবেন না। চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলুন, নিয়মিত চিকিৎসা নিন, কেমিকেল মুক্ত খাদ্যাভ্যাসগুলো মেনে চলার মধ্য দিয়েই ক্যান্সার রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া যায়। সাহস হারাবেন তাহলেই ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।”
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, যক্ষ্মা রোগের একসময় মৃত্যুর সমার্থক ছিল যক্ষ্মা, কিন্তু আজ চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতে তা নিরাময়যোগ্য। তাঁর আশা, একদিন ক্যান্সারও এমন একটি রোগে পরিণত হবে, যা ভয় নয় বরং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য হয়ে উঠবে।
দেবিদ্বারের গর্ব মরন ব্যাধি ক্যান্সার জয়ী অধ্যাপক ড. জেসমিন পারভীন (সীমা) পাঠানকে দেবিদ্বারবাসীর পক্ষ থেকে এই সাহসী ও মানবিক শিক্ষাবিদকে অভিনন্দন এবং শুভকামনা জানানো হয়।তাঁর জন্য রইল সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর প্রার্থনা—যেন আরও অনেক জীবন তাঁর হাতে প্রেরণা পায়, নতুন আশার আলো খুঁজে পায়।