গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বিশেষ প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কোকডহরা গ্রামে এক প্রবাসী যুবককে অপহরণের অভিযোগ করেছেন তার মা সুফিয়া বেগম। এ ঘটনায় তিনি কালিহাতী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, কোকডহরা গ্রামের মৃত রুস্তম সরকারের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (বাবু) (৪০) দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ জানুয়ারি তিনি দেশে ফেরেন। ২০ বছর আগে তিনি উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের মেয়ে মনিরা আক্তারকে (৩৫) বিয়ে করেন। তাদের সংসারে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে ফেরার পর থেকেই আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে তার স্ত্রী মনিরা আক্তারের পারিবারিক কলহ চলছিল। এরই জেরে ৬ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ১২টার দিকে কে বা কারা একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপহৃত আবু বক্করের মা সুফিয়া বেগম বলেন,
আমার ছেলের থাকার ঘর ও আমার থাকার ঘর আলাদা। ঘটনার দিন রাতে হঠাৎ কিছু লোক বাড়িতে ঢুকে হুমকি দিতে থাকে। আমি ভয়ে বাইরে আসিনি। পরে যখন ওরা চলে যায়, তখন বের হয়ে দেখি ছেলের ঘরের দরজার খিল ভাঙা এবং ছেলে নেই। আশপাশের লোকজন জানিয়েছেন, একটি মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। এরপর আমি কালিহাতী থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
উৎরাইল বটতলা বাজারের নাইট গার্ড মনির হোসেন বলেন, রাতে বাজারের দক্ষিণ পাশে পুকুরের সামনে একটি মাইক্রোবাস দাঁড়ায়। এরপর তারা বটতলা হয়ে বাবুদের বাসায় যায় এবং মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে ফিরে আসে। সাথে একটি মোটরসাইকেলে থাকা এক মহিলাকেও দেখতে পাই।
বন্ধু লিটন মিয়া জানান, রাত ১২টার দিকে বাবু আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ‘তাড়াতাড়ি আমার বাড়িতে আয়।’ আমি ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সেখানে পৌঁছাই, কিন্তু বাবুকে আর পাইনি। পরে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করি, নাইট গার্ডের কাছ থেকেও জানতে পারি মাইক্রোবাসটি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল।
কোকডহরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুব্রত কুমার বণিক বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। দেশে ফেরার পর তার পারিবারিক কলহ চলছিল বলে শুনেছি। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, তারা যেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। কারা জড়িত এবং কী ঘটেছে, তা জানতে একটু সময় লাগবে।