নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লায় আমরাতলিতে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে ফসলি জমির বুকে ভেকুর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুজ নিয়ে জানা যায়, ইমরান তালাশী নামক এক কথিত সাংবাদিকের পরামর্শে ও অদৃশ্য প্রশ্রয়ে অসাধু মাটি বিক্রেতা চক্র ভূমিদস্যু গং পুকুর খননের কথা বলে প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে অবৈধ ভাবে ভেকু দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে অধিক মুনাফায় বিক্রি করে আসছে, ফসলের মাঠ বিলীন করে মাটি চলে যাচ্ছে দুরদুরান্তে। ভয়ে কোন কৃষক অভিযোগ করার সাহস করছে না।
সরেজমিনে খুজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমরাতলী গ্রামের মামুন মিয়া নামের এক ব্যক্তির নামে পুকুরকে মাছ চাষে উপযোগী করা কথা বলে প্রশাসন থেকে পুকুর খননের অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের চোখে ধুলু দিয়ে প্রতারনা করে মাটি বিক্রি করে আসছে শামীম ও আড়াইওড়া গ্রামের কামাল গং। তারা দিনের পর দিন অবৈধ বেকুর মাধ্যমে ফসলি জমির মাটি কাটতেছেন। এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয় জনগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জনগণ ও ভূক্তভোগী কৃষকরা জানান, প্রথমে এই মাটি বিক্রেতারা অল্প জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা চালু করেন, পরে অতিরিক্ত খননে পুকুরে রূপনিলে এক পর্যায়ে আাশেপাশের কৃষি জমি ভাংতে শুরু হলে অসহায় জমি মালিকরা তখন নামমাত্র মূল্যে তাদের জমি ছেড়ে দিতে বাধ্যহয়। জমি বিক্রি করতে রাজি না হলে ভূমিদস্যুরা বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। এভাবেই নিরীহ কৃষকদের জমি ছাড়া করছে ঐ ভূমিদস্যুরা।
মাটি বিক্রি করে আঙুল ফুলে হয়েছেন কলাগাছ এবং গড়ে তুলছেন একের পর এক মাছের খামার। যেখানে এক সময় বিভিন্ন জাতের ধান, সবজি, কলাগাছ সহ বিভিন্ন ফল-ফলাদি চাষ হতো।
এছাড়াও তাদের ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরের মাধ্যমে সরবরাহের ফলে রাস্ত-ঘাট ভেঙে যাচ্ছে এবং ধুলো-বালির কারনে পথচারিদের চলাচলে ব্যপক জণদূর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি দিন দিন এলাকার ফসলি কৃষি জমিও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে বাধা দিলে কামাল ও মামুন মিয়া গং বলেন তারা অনুমতি নিয়ে মাটি বিক্রি করছেন।
এবিষয়ে, বিভিন্ন মহলে একাধিবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার হয়নি জানিয়ে স্থানীয় কৃষক জনতা বলেন, আমরা অভিযোগ করলে বিভিন্ন ভাবে আমাদের হুমকী-ধমকী দেওয়া এবং হয়রানী করা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাই, তিনি যেন আর কোন ফসলের জমি ও আমাদের রাস্তা ঘাট নষ্ট করতে না পারে।
এ বিষয়ে শামীম বলেন, আমি ট্রাক সাপ্ল্যালাইয়ার। আমরাতলিতে মাছের প্রজেক্ট এর কথা বলে দীর্ঘ অনেক বছর যাবত মাটির অনুমতি নেন উপজেলার আরাইওড়া গ্রামের মামুন মিয়ার নামে। আমি জমির মাটি বিক্রি করিনা। আমি শুধু ট্রাকের সাপ্লাই দেই। সাংবাদিকরা আসলে বলে দেই আমার কাছের যোগাযোগ না করে কামাল ও রফিক ভাই এর সাথে কথা বলেতে। তারা মাটির ব্যাবসা করে তাদের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে হবে।
শামীম এর পক্ষে সাংবাদিক পরিচয়ে ইমরান তালাশি নামক এক কথিত সাংবাদিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদক মামুনুর রশীদ কে কল দিয়ে হুমকি দেয়। ইমরান তালাশি বলেন, শামীম এর সাথে এই বিষয়ে কোন কথা না বলতে। কিছু বলার থাকলে তাকে বলতে বলা হয়। তার কথায় অনুমেয় যে তার পরামর্শে ও অদৃশ্য প্রশ্রয়ে এই অবৈধ মাটি কাটা চলছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই কথিত সাংবাদিক ইমরান তালাশি একজন নারী লোভী এবং লম্পট প্রকৃতির লোক। একাধিক নারীর সাথে তার সম্পর্কের খবর পাওয়া গেছে। তিনি সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে চলছেন। এই অবৈধ মাটি সিন্ডিকেট চক্রের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। এই কথিত সাংবাদিকের পরামর্শে ও প্রশ্রয়ে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমরাতলিতে ফসলি জমির বুকে চলছে ভেকুর এই তাণ্ডব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ভূমি খেকোদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।