নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দাফন করা হতে পারে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা শেষে সংসদ ভবন এলাকার পাশে অবস্থিত জিয়া উদ্যানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই খালেদা জিয়ার দাফনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া দলের পক্ষ থেকে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দীর্ঘ সময় কারাবন্দি ছিলেন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। ফলে ধীরে ধীরে তার শরীরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা গুরুতর রোগ বাসা বাঁধে।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হলেও তাকে গুলশানের ভাড়া বাসভবন ‘ফিরোজা’য় কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না পাওয়ায় তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি ঘটে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে গণআন্দোলন শুরু হয়, যা পরে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। টানা ৩৫ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন।
পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি তিনি লন্ডনে যান। সেখানে ১১৭ দিন চিকিৎসা শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া। কিছুটা সুস্থতা ফিরে পেলেও বয়সজনিত দুর্বলতা ও একাধিক রোগের জটিলতায় তিনি ক্রমেই ভেঙে পড়েন।
সবশেষ গত ২৩ নভেম্বর তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় এক মাসের বেশি সময় সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বিএনপির এই শীর্ষ নেত্রী।