বঙ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : আধিপত্যবাদীদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ধৈর্যের আহ্বান, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসররা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ অবস্থায় সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচল–সংলগ্ন ৩০০ ফিট সড়কে বিএনপি আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে ফিরে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন,
“প্রথমেই আমি রাব্বুল আলামীনের দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া আদায় করছি। তাঁর অশেষ রহমতেই প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরেছি।”
তিনি বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এরপর ১৯৭৫ সালের সিপাহী–জনতার বিপ্লব ও ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরেন।
তারেক রহমান বলেন,
“২০২৪ সালের ৫ আগস্ট একাত্তরের মতোই এ দেশের ছাত্র–জনতা, কৃষক, শ্রমিক, নারী–পুরুষ, মাদ্রাসার ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রেখেছে।”
দেশের মানুষের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন,
“বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা চায় যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার। আজ আমাদের সময় এসেছে—সবাই মিলে দেশ গড়ার।”
বিশ্ববরেণ্য নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন,
“মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম’। আর আমি দেশবাসীকে বলতে চাই—‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান ফর মাই কান্ট্রি, ফর মাই পিপল’।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন,
“বিগত ১৫ বছরে শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নয়, সাধারণ মানুষও গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই দুঃশাসনের স্মৃতি জাতি কখনো ভুলবে না।”
সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“জুলাই আন্দোলনের সাহসী প্রজন্মের প্রতিনিধি ওসমান হাদীকে শহীদ করা হয়েছে। সে চেয়েছিল এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। তার রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।”
বক্তব্যের শেষাংশে তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন,
“৭১ ও ২৪–এর শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের পথ দেখায়। ধৈর্য, ঐক্য ও সাহস নিয়ে একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”