বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : ঢাকা থেকে জানানো হয়েছে—বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো গুরুতর কিন্তু স্থিতিশীল। নানা জটিলতা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসক দলের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থার খবর পেয়ে দ্রুত লন্ডনের একটি বিশেষায়িত ক্লিনিকে যান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
লন্ডন–ঢাকা লাইভ কনসালটেশনে চিকিৎসা কৌশল নির্ধারণ
লন্ডনে পৌঁছে তারেক রহমান সেখানে দায়িত্বরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সামনে বেগম জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত ব্রিফ করেন। পরবর্তী ধাপে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনায় যুক্ত হন। দুই দেশের বিশেষজ্ঞদের যৌথ পরামর্শে নতুন চিকিৎসা কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
চিকিৎসা প্রয়োগের পর থেকে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার আর অবনতি হয়নি, বরং কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
একই লন্ডন ক্লিনিকে এর আগেও চিকিৎসা নিয়েছিলেন বেগম জিয়া
পারিবারিক সূত্র জানায়, এর আগে এই লন্ডন ক্লিনিকেই দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তাই আবারও এখানকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় করা হচ্ছে।
ঢাকার এভারকেয়ারে তিন দিন ধরে অবস্থার তেমন পরিবর্তন নেই
শনিবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ. জেড. এম. জাহিদ হোসেন জানান—
“বেগম জিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তিন দিন ধরে তিনি একই অবস্থায় আছেন। চিকিৎসকদের দেওয়া ওষুধ তাঁকে সাপোর্ট দিচ্ছে।”
তারেক রহমানের পূর্ণ সময় সমন্বয়
দলের দায়িত্বশীল সূত্রের ভাষ্য—মায়ের গুরুতর অসুস্থতার পর থেকেই তারেক রহমান লন্ডন ও ঢাকার চিকিৎসকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয়ের কাজ করছেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।
পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা জানায়,
“এ মুহূর্তে চিকিৎসাই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
দেশজুড়ে দোয়া–মোনাজাত, নেতৃবৃন্দের সহানুভূতি
গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তাঁর অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানানো হলে দেশজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
বেগম জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও উপাসনালয়ে দোয়া, প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার দোয়ার আহ্বান
প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীর প্রতি খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসপাতালে খোঁজ নিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য—
“কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে দেশের মানুষের এমন সার্বজনীন ভালোবাসা ও সহমর্মিতা সাম্প্রতিক সময়ে আর দেখা যায়নি।”