নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঠিক এমন মুহূর্তে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিএনপির অভিযোগ—আইনি বা নিরাপত্তাজনিত যুক্তি নয়, বরং রাজনৈতিক স্বার্থেই তারেকের দেশে ফেরা আটকে রাখা হয়েছে ‘ত্রিমুখী শক্তির’ সমন্বিত সিদ্ধান্ত।
ড. ইউনূসের ‘অনাগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন
বিএনপির শীর্ষ সূত্রগুলোর দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মুখে মানবিকতার কথা বললেও বাস্তবে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে অনাগ্রহী।
গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে তারা বলছে—নিরাপত্তার অজুহাতে তারেককে দূরে রাখার একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশল চলছে, যা ‘মাইনাস ফর্মুলা’র সংশোধিত সংস্করণ।
জামায়াত ও সেনাবাহিনীর একাংশও ‘বাধা’—এমন অভিযোগ
রাজনৈতিক অঙ্গনের আরেকটি চাঞ্চল্যকর দাবি—জামায়াতে ইসলামীও এই মুহূর্তে তারেক রহমানের দেশে ফেরা চাইছে না।
তারা নাকি সরকারকে জানিয়েছে, তারেক দেশে ফিরলে বিরোধী রাজনীতির ভারসাম্য পাল্টে যেতে পারে।
এ ছাড়া সেনাবাহিনীর ভেতরেও বিষয়টি নিয়ে বিভক্ত মত রয়েছে। একটি প্রভাবশালী অংশের অবস্থান—এখন তারেক ফিরে আসলে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মাঠের চাপ আরও বেড়ে যেতে পারে।
মাইনাস ফর্মুলার আতঙ্ক আবারও?
বিএনপি নেতাদের দাবি, ২০০৭–এর মতো আবারও তারেক রহমানকে রাজনীতির কেন্দ্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখার উদ্যোগ চলছে।
তাদের মতে, তারেকের জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক প্রভাব সরকার এবং কিছু শক্তি ‘ঝুঁকি’ হিসেবে দেখছে।
মানবিক সংকটের মাঝেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা
মায়ের সংকটাপন্ন অবস্থায় দেশে ফিরতে চাইলেও রাজনৈতিক সমীকরণ, আন্তর্জাতিক বার্তা এবং সরকারের কৌশলগত অবস্থানের কারণে তারেক রহমান কার্যত অসহায়।
তিনি নিজেও বলেছেন—দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এখন আর তার একার হাতে নেই।
বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা এখন কেবল একটি মানবিক ইস্যু নয়—এটি বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ শক্তির ভারসাম্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাদের ভাষায়—“মানবিকতার চেয়ে রাজনৈতিক হিসাবই বড় হয়ে উঠেছে।”