ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫ জন কর্মচারী হঠাৎ চাকরিচ্যুত হওয়ায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায় পুনঃনিয়োগের দাবি তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের তথ্যমতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বহাল তবিয়তে টিকে থাকলেও তাদেরকে হতে হয়েছে ছাঁটাইয়ের শিকার।
সোমবার দুপুরে শহরের মানব কল্যাণ পরিষদ ট্রেনিং সেন্টার এ ‘বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, ঠাকুরগাঁও’ এর ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আউটসোর্সিং চাকরিচ্যুত কর্মীদের পক্ষে সন্দিপ কুমার রায়।।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ওয়ার্ড বয়, ওটি বয়, সিকিউরিটি গার্ড, আয়া, বাবুর্চি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও লিফট অপারেটর হিসেবে কর্মরত ৩৫ জন কর্মচারী করোনাকাল, ডেঙ্গু ও জুলাই গণঅভ্যূত্থান এ আহতদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু হঠাৎ চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে হাজিরা খাতা ও ডিউটি রোস্টার থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। চাকরিচ্যুতির কোনো লিখিত নোটিশও দেওয়া হয়নি।
তাদের অভিযোগ, কোনো তদন্ত বা কথা না শুনেই রাজনৈতিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্ম থেকে বাদ দিয়েছে। নতুন নিয়োগে তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি, বরং অযোগ্য ও নবাগতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেকের বকেয়া বেতনও এখনো পরিশোধ করা হয়নি।
এ সময় জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান তারা।
কান্না জড়িত কন্ঠে সহকারী বাবুর্চি পদ থেকে চাকরিচুত্য হওয়া উম্মে হাফসা বলেন, হঠাৎ করে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম কি খাব কিভাবে চলব কিছুই বুঝতে পারছি না। এত বছর চাকরি করে এখন হঠাৎ করেই শুনতেছি আমাদের চাকরি নাই।
চাকরিচ্যুত হওয়া আনারুল নামে একজন বলেন আমরা বিগত চার পাঁচ বছর ধরে চাকরি করার পরে এখন হঠাৎ করে শুনছি চাকরি চলে গেছে। আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই যেন আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়।
ওয়ার্ড বয় সেন্টু কুমার বলেন এত বছর ধরে চাকরি করছি তারপরেও আমাদের নোটিশ ছাড়া চাকরিচুত্য করা হয়েছে। বাড়িতে বাবা-মা অসুস্থ তাদের নিয়ে এখন কোথায় যাব। রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমরা তো কোন কাজে গাফিলতি করিনি কি অপরাধে আমাদের চাকরিচুত্য করা হলো।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মনজুরুল ইসলাম জানান, তাদের আমরা বাতিল করার কেউ না। এরা আউটসোর্সিং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগকৃত। আমরা সাম্প্রতিক চিঠি পেয়েছি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩৫ জনকে বাতিল করেছে এবং নতুন ৩৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের নিয়োগ ঠিকাদার কোম্পানির মাধ্যমে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শারমি এর স্বত্বাধিকারী আশরাফুল ইসলাম এর সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নওগাঁ জেলা থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।
জাকির মোস্তাফিজ মিলু