হাসনাত তুহিন ফেনী প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জুলাই-আগষ্ট গণ অভ্যত্থানের আহতদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ফেনীর ছয় সাংবাদিক। গত ৪ আগস্ট মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত সাংবাদিক জবাবদিহি প্রত্রিকার ফেনী জেলা প্রতিনিধি হাসনাত তুহিন, দৈনিক দেশ রুপান্তর ও ইউএনবির ফেনী প্রতিনিধি মো: শফি উল্লাহ রিপন, বাংলাভিষন ও বাংলা ট্রিবিউন ফেনী প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, দৈনিক দিনকাল প্রতিনিধি মফিজুর রহমান, ফেনীর গৌরব সম্পাদক কামাল উদ্দিন ভূঞা, অনলাইন আজকের ফেনী সম্পাদক আমজাদুর রহমানের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে গত ১ জানুয়ারী ছাত্র-জনতার গন-অভ্যুথানে শহীদ ও আহতদের চুড়ান্ত তালিকা প্রনয়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। যাতে ৩১ জানুয়ারীর মধ্যে নিহতদের পরিবার ও আহতরা সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমানসহ আবেদন করেন। গত ৪ আগস্ট মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্থ ও আহত ছয় সাংবাদিক আবেদন করলেও যাচাই বাচাই কমিটি তাদের নাম বাদ দিয়ে অন্যান্য ছাত্রদের নাম জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরন করেন।
পাঁচ জনের যাচাই বাচাই কমিটিতে অন্তভুক্ত দাগনভূঞার দুই ছাত্র প্রতিনিধি সাংবাদিকদের বিষয়ে আপত্তি আছে বলে অনাস্থা দেন বলে জানান দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম। তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেদন জেলা কমিটি।
ছাত্র প্রতিনিধি প্রিন্স মাহামুদ আজিম বলেন, প্রথম তালিকায় ১০ জন সাংবাদিক যদি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে বাকিরা কেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে না এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সাথে আলোচনা করব।
সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ৪ আগষ্ট সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে আহত হয়ে তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। হাসপাতাল থেকে তালিকা প্রেরন করা হলেও কেন আহতের তালিকায় অন্তভুক্ত হয়নি জানি না। সাংবাদিক হাসনাত তুহিন বলেন, ৪ আগষ্ট পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাথায় আঘাত করে লাইভে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।গুরুতর আহত অবস্থায় ফেনীর সদর হাসপাতালে ৪ দিন চিকিৎসা গ্রহণ করি।আবেদনের সাথে চিকিৎসা সনদ,৬ টা জাতীয় দৈনিক পেপার কাটিং,অনলাইন ভিডিও রিপোর্ট সহ যাবতীয় ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার পরেও দাগনভূঞা উপজেলা কমিটির আপত্তির কারণে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার হয়।কেন কিসের আপত্তি রয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেন নি তারা। সাংবাদিক শফি উল্লাহ বলেন, সংঘর্ষের সময়ের ভিড়িও ফুটেজ, আহত হওয়ার সকল ডকুমেন্ট ও ছাত্রলীগের হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ বাইকটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়াসহ নানাভাবে নির্যাতিত হলেও তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে। ফেনীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন পেশার মোট ৪০৬ জন আহতদের তালিকাভুক্ত হয়। সেখানে ১০ জন্য সাংবাদিকদের নাম রয়েছে। প্রকৃত আহত সাংবাদিকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি।
তালিকায় যুক্ত করা সাংবাদিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলার যাচাই বাচাই কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিভিল সার্জন বলেন, ১০ জন সাংবাদিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কিভাবে হয়েছে আমি জানি না। তিনি আরো বলেন, ফেনী সদর কমিটি সহ ৬ উপজেলায় যাচাই বাচাই কমিটির করে দেওয়া হয়েছে,আহতদের আবেদন অনুযায়ী উপজেলা কমিটির ছাত্রদের মন্ত্যবর কলমে লিখে দিয়েছেন তাদের আপত্তি রয়েছে মর্মমে বাতিল করা হয়েছে এখানে আমার করার কিছু নেই। অন্য দিকে সাংবাদিকদের কেন বাদ দেওয়া হয়েছে দাগনভূঞার ছাত্র প্রতিনিধি ফাহিম ও তানবীর থেকে জানতে চাইলে তার বলেন, যাচাই বাচাই কমিটির সকলের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছ শুধু মাত্র আমাদের কথা বলা হয়েছে কেন জানি না।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, কি কারনে সাংবাদিকদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে তা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে।