বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর আগে গতকাল শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অন্তত ২৩ জেলায় ৪২টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৪ জেলার ২১টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
একই সময় চার জেলায় চার নির্বাচনী ক্যাম্প ও দুই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সাত জেলায় ১১টি যানবাহন ও চার জেলায় চারটি স্থাপনায় (ভোটকেন্দ্র নয় এমন বিদ্যালয়) আগুন লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া দুটি জেলায় ভাঙচুর করা হয়েছে অন্তত ২২টি যানবাহন।
আজ ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন বর্জন করছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ছাড়াও দলটির যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন শরিক দল এবং সিপিবি, বাম জোটসহ কয়েকটি বামপন্থী দল। আন্দোলনের অংশ হিসেবে হরতাল–অবরোধ, বিক্ষোভ–মিছিল, সমাবেশের মতো কর্মসূচি পালন করে আসছে দলগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ও আজ ভোটের দিন রোববার দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
বিরোধীদের এ কর্মসূচি চলাকালে গতকাল বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীতে দলটির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের। আর গাজীপুর, রাজশাহী, হবিগঞ্জ, সিলেট, খুলনা, যশোর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও মাদারীপুরে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের দুই স্থানে গতকাল ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে ত্রিভুজাকৃতির লোহার পাত ফেলে রাখায় চাকা পাংচার হয়ে বিকল হয় ৮০টির মতো যাত্রীবাহী ও পণ্যবোঝাই গাড়ি। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ২০ দিনে দেশে নির্বাচনী সংঘাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া প্রচার শুরুর আগে পিরোজপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন মারা গেছেন।
এই পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জন করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় প্রতিটি নাশকতার ঘটনার পর বিএনপির ওপর দোষ চাপানো আওয়ামী লীগ ও তাদের ‘দলীয় পুলিশ প্রশাসনের’ মজ্জাগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেছেন, ‘আগুন দিয়ে গাড়ি পোড়ানো, ট্রেনে আগুন, রেললাইন ওপড়ানো, সহিংসতা, গানপাউডার ও লগি-বইঠা দিয়ে মানুষ হত্যার মূল হোতা আওয়ামী লীগ।’