1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আসন্ন নির্বাচনী মিছিলে জনগণের সঙ্গে থাকার প্রত্যয় তারেক রহমানের নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে— দৃঢ় ঘোষণা মহান বিজয় দিবসে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও এমপি পদপ্রার্থীদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স নীতিমালা ২০২৫ জারি পানছড়িতে বিজিবির সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম: নলকূপ, ঢেউটিন ও অনুদান বিতরণ বাজুসের প্রধান উপদেষ্টা হলেন সায়েম সোবহান আনভীর হাদি গুলির ঘটনায় ৩ দফা দাবি ডাকসু ভিপির, দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অর্থ পাচারের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত, অব্যাহতি পেল সাইমন ওভারসিজ আইএসটি’তে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন বরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত মাধবপুরে সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি

আফগান প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দের উত্থান যেভাবে

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৭৯ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : কাবুল দখলের তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার যখন তালেবান তাদের সরকারের প্রধান হিসেবে মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের নাম ঘোষণা করে, তখন অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। কারণ, সম্ভাব্য সরকার প্রধান হিসাবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছিলেন তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার, যিনি গত দুই বছর ধরে কাতারের রাজধানী দোহায় বসে আমেরিকানদের সাথে আপোষ মীমাংসায় নেতৃত্ব দিয়েছেন।

চীন, রাশিয়া, ইরান-সহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে তিনি স্বীকৃতির জন্য আগাম দেন-দরবারও করেছেন। কিন্তু আফগানিস্তান নিয়ে করা আরো অনেক অনুমানের মত কাবুলে সম্ভাব্য নতুন সরকার নিয়ে অনুমানও ঠিক হয়নি। কাবুল দখলের পর দোহা থেকে তালেবানের ক’জন নেতা যখন কান্দাহারে হাজির হন, তখন মোল্লাহ হাসান আখুন্দকেও সেখানে দেখা যায় – সর্বশেষ দেখার বহুদিন পর । তবে তিনিই যে তালেবান সরকারের হাল ধরবেন, বাইরের বিশ্বে কেউই হয়তো সে সময় তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি।

বহির্বিশ্বে তেমন পরিচিতি না থাকলেও তালেবান নেতৃত্ব মোল্লাহ আখুন্দকেই শেষ পর্যন্ত সরকার প্রধান হিসাবে তাকে বেছে নিয়েছে। এ ব্যাপারে লন্ডনে আফগান সাংবাদিক এবং আফগানিস্তানের রাজনীতির বিশ্লেষক সাইয়েদ আব্দুল্লাহ নিজামী বলেন, ‘আফগানিস্তানের বাইরে অনেক মানুষ অবাক হলেও, আফগানিস্তানে বা তালেবানের নেতা-কর্মীদের ভেতর এ নিয়ে তেমন কোনো বিস্ময় নেই’ ।

তিনি জানান, মোল্লাহ হাসান আখুন্দ তালেবানের মূল নেতৃত্বের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন সদস্য এবং তালেবানের মধ্যে নেতৃত্ব এবং মাঠ পর্যায়ে তার গ্রহণযোগ্যতা, মর্যাদা-সম্মান অদ্বিতীয়।

বিবিসি আফগান সার্ভিসের সাথে যুক্ত নিজামী বলেন, ‘গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লড়াইতে মোল্লাহ আখুন্দ ছিলেন তালেবানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা’।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসঙ্ঘের সন্ত্রাসীর তালিকায় মোল্লাহ আখুন্দের নাম রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলাপ-আলোচনা চলার সময় তাকে এতদিন সামনে আনা হয়নি। কিন্তু সংগঠনের ভেতর তার প্রভাব মোল্লাহ বারাদার বা অধিকাংশ নেতার চেয়ে সবসময়ই বেশি।

কে এই মোল্লাহ হাসান আখুন্দ?
আফগানিস্তানের নতুন নেতা মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের জন্ম কান্দাহারে। সেখানেই মাদ্রাসায় তার পড়াশোনা। তার সত্যিকার বয়স নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। ধারণা করা হয়, তার বয়স ৬০ এবং ৭০ এর মাঝামাঝি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা তালিকা অনুযায়ী তার বয়স ৭৬। তবে বয়স নিয়ে মত-বিরোধ থাকলেও তালেবানের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বয়সে মোল্লাহ আখুন্দ সবচেয়ে বড়।

আফগান গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৯৪-তে কান্দাহারে মোল্লাহ মোহাম্মদ ওমরের নেতৃত্বে যে ক’জন মাদ্রাসা-পড়ুয়া জাতিগত পশতুন যুবক তালেবান আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন, মোল্লাহ হাসান আখুন্দ ছিলেন তাদের অন্যতম।

১৯৯৬ সালে তালেবান কাবুল দখল করে যখন সরকার গঠন করেছিল, তখন তিনি সেই সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন। বাইরের বিশ্বের সাথে সম্পর্ক নিয়ে সে সময়কার তালেবান সরকারের অবশ্য তেমন কিছু করার ছিল না, কারণ মাত্র তিনটি দেশ পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল।

পরে উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মোল্লাহ আখুন্দ। যেহেতু মোল্লাহ ওমর ছিলেন আমীর, ফলে ২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর আগ পর্যন্ত কার্যত তিনিই ছিলেন সেই তালেবান সরকারের প্রধান। মোল্লাহ ওমরের অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন মোল্লাহ আখুন্দ।

২০০১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়া তালেবান নেতারা বালুচিস্তানের কোয়েটায় যে নেতৃত্ব পরিষদ গঠন করেন – যেটি রাহবারি শুরা বা কোয়েটা শুরা নামে পরিচিত – তাতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখতে শুরু করেন মোল্লাহ আখুন্দ।

রাজনৈতিক কৌশল থেকে শুরু করে সামরিক কৌশল সেই থেকে তালেবানের সব বিষয়ের কেন্দ্রে তিনি রয়ে গেছেন।

তালেবানের বর্তমান শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সাথে তার সম্পর্কও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তালেবানের নির্ভরযোগ্য সূত্র উদ্ধৃত করে তাদের এক খবরে এমন কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ‘সংগঠনের সবাই তাকে খুব সম্মান করে, বিশেষ করে আমির-উল-মুমিনিন (হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা)’।

মোল্লাহ আখুন্দের চিন্তা-ভাবনা কেমন?
সাইয়েদ আবদুল্লাহ নিজামী বলছেন, ‘খুবই গতানুগতিক রক্ষণশীল পশতুন আফগান’। তিনি বলেন, পুরনো ধ্যান-ধারণা পোষণ করেন। বারাদার বা মোত্ত্বাকির মত বিদেশ সফর করেননি। দেশের বাইরে বলতে গেছেন শুধু সৌদি আরব এবং পাকিস্তান। ফলে বাইরের বিশ্ব সম্পর্কে খুব বেশি কিছু তার জানার কথা নয়, জানার ইচ্ছা আছে বলেও শোনা যায় না।’

তবে আফগান সমাজ এবং তার আগ-পাশ-তলা খুব ভালো বোঝেন মোল্লাহ আখুন্দ, এবং আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ই নিয়ে তার প্রধান আগ্রহ, জানান সাইয়েদ নিজামী। ‘বিশেষ করে আফগান সমাজের উপজাতীয় চরিত্র এবং তা কীভাবে কাজ করে তা তিনি খুব ভালো বোঝেন।’

পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্র এবং মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০০১ সালে অন্য সব প্রধান তালেবান নেতার সাথে মোল্লাহ আখুন্দও পাকিস্তানে পালিয়ে যান। পরে তিনি বালুচিস্তানে একটি মাদ্রাসার প্রধান হিসাবে ছিলেন। কিন্তু হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার ইমেজ যেমন প্রধানত একজন ধর্মীয় আধ্যাত্মিক নেতার, মোল্লাহ আখুন্দের তেমন নয়।

‘তিনি যতটা না ধর্মীয় নেতা, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক নেতা,’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ইন্সটিটিউট অব পিসের গবেষক আফসানদিয়ার মীর, যিনি তালেবান নেতৃত্ব নিয়ে গবেষণা করেছেন।

তারপরও ধারণা করা হচ্ছিল যে তালেবান যখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির উন্মুখ, সে সময় তারা সরকার প্রধান হিসাবে এমন কাউকে নিয়োগ দেবে না যিনি সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছেন এবং যার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার খাড়া ঝুলছে।

অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, তালেবানের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে ভেতরে ভেতরে একটি টানাপড়েন চলছে এবং মোল্লাহ আখুন্দের নিয়োগ হয়তো সেক্ষেত্রে একটি আপসরফা।

সাইয়েদ নিজামী বলেন, ‘বড় নেতাদের মধ্যে অন্য যে কারও চেয়ে তালেবানের ভেতর মোল্লাহ আখুন্দের মর্যাদা, গ্রহণযোগ্যতা অপেক্ষাকৃত বেশি – এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তালেবানের মধ্যে তাকে নিয়ে বিতর্ক কম।’

‘তাছাড়া, কান্দাহার-ভিত্তিক যে তালেবান আন্দোলন, সেখানে তিনি খুবই প্রভাবশালী। কান্দাহারে তৃণমূলে কার কতটা প্রভাব, তালেবান নেতাদের কাছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

আইএসআই এবং আখুন্দের সম্পর্ক
পাকিস্তানের সরকার বিশেষ করে সেদেশের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাথেও মোল্লাহ আখুন্দের সম্পর্ক ভালো বলে জানা যায় – যদিও এসব সম্পর্কের কথা তালেবান বা পাকিস্তান কেউই কখনও স্বীকার করে না। তবে নতুন সরকারের ঘোষণা দেয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে আইএসআই প্রধান জেনারেল ফায়েজ হামিদের কাবুল সফর নিয়ে এমন কানাঘুষো শুরু হয়েছে যে তিনি এই সরকার গঠনে পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছেন কি-না।

সাইয়েদ নিজামী বলেন, ‘সে কারণে আপনি হয়তো দেখছেন, কাবুলে গত দু’দিনে বিক্ষোভে পাকিস্তান-বিরোধী স্লোগান উঠছে। যদিও এ সময় আইএসআই প্রধানের কাবুল সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে আফগানিস্তানের বিভিন্ন কারাগার থেকে পাকিস্তান তালেবানের (টিটিপি) কিছু সদস্যকে ছেড়ে দেয়া নিয়ে তাদের উদ্বেগ জানাতে আইএসআই প্রধান এসেছিলেন।’

১৯৯৬-২০০১ সালের তালেবানের চেয়ে বর্তমান তালেবান অন্যরকম, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অপেক্ষাকৃত অগ্রসর – এমন যেসব আশা অনেক পশ্চিমা এবং শহুরে আফগানরা করছিলেন, মোল্লাহ হাসান আখুন্দের মত একজন কট্টর রক্ষণশীলকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগে তারা অনেকটাই হতাশ হবেন।

তবে সাইয়েদ আব্দুল্লাহ নিজামী মনে করেন, আমির হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার মতো মোল্লাহ হাসান আখুন্দও সরকারে অনেকটাই ‘অভিভাবকের’ ভূমিকায় থাকবেন। ‘তাদের পরের প্রজন্মের কয়েকজন – মোল্লাহ বারাদার (উপ-প্রধানমন্ত্রী), সিরাজউদ্দিন হাক্কানী (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী), মোল্লাহ ইয়াকুব (প্রতিরক্ষামন্ত্রী) এবং আমির খান মোত্ত্বাকি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) – এরাই হবেন আগামী দিনে আফগানিস্তানের ক্ষমতার প্রধান প্রধান ভরকেন্দ্র। এরাই মূলত সরকার চালাবেন বলে মনে হয়।’ সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com