রাঙামাটি প্রতিনিধি : বিশ্ব শান্তি, সম্প্রীতি ও মৈত্রীর আহ্বান জানিয়ে রাঙামাটি রাজবন বিহারে শেষ হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দুই দিনব্যাপী ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব। শুক্রবার দুপুরে ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশ্যে ২৪ ঘণ্টায় চীবর প্রস্তুত ও দান করার মধ্য দিয়ে এ বছরের কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
দুপুর ২টায় ভিক্ষু সংঘের নিকট চীবর হস্তান্তর করেন রাঙামাটির সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক যুগ্ম জেলা জজ দীপেন দেওয়ান। এসময় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হাবিব উল্লাহ মারুফ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও বৌদ্ধ ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার সকালে পঞ্চশীল প্রার্থনা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি সম্পন্ন হয়। দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হয় কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেইন ঘর উদ্বোধন ও চরকায় সুতা কাটার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এ উৎসব। রাতভর তুলা থেকে সুতা কাটা, রং করা, আগুনে শুকানোসহ নানা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন প্রায় চারশত বেইন ও দেড়শতাধিক চরকার কর্মী এবং হাজারেরও বেশি দায়ক-দায়িকা। ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে চীবর বুননের কাজ।
এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে ৪৮ জনসহ আমেরিকা, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকা থেকে বহু পুণ্যার্থী চীবর দানানুষ্ঠানে যোগ দেন। উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজবন বিহার এলাকা পরিণত হয় মিলনমেলায়; বিহার প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় বসে নানা পণ্যের দোকানের সারি।
১৯৭৬ সাল থেকে রাঙামাটি রাজবন বিহারে নিয়মিতভাবে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর এ উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে লাখো ভক্ত-পুণ্যার্থী ভিড় করেন। পারস্পরিক সম্প্রীতি, শান্তি ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠাই এ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য।