বঙ্গ নিউজ বিডি প্রতিনিধি : রাজশাহীর হেতেম খাঁ এলাকায় একসময় নিরীহ ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করা ওবাইদুল ইসলাম সুমন ওরফে রুবেল, সময়ের সাথে সাথে জড়িয়ে পড়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। ভাড়াটিয়া ছিলেন হেতের খাঁ এলাকার ৩৮০ নম্বর বাড়িতে, পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে পরিচয় দিতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুমনের অপরাধজগতে প্রবেশ ঘটে সাবেক যুবলীগ নেতা হুমায়ুন চৌধুরী মিজানের সাথে পরিচয়ের পর। হুমায়ুনের পারিবারিক বাড়ি রাজশাহীর ধামুর হাট এলাকায়। তার পিতা এলাকায় একজন রাজাকার হিসেবে পরিচিত। হুমায়ুনের মাধ্যমে ওবাইদুল ইসলাম সুমন হেতেম খাঁ এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কমিশনার মানিকের বাড়ির পাশে বসবাস শুরু করেন।
পরিচয় গোপন রেখে স্থানীয় রাজনৈতিক, বিশেষ করে ততকালিন আওয়ামীলীগের কিছু নেতার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তলেন তিনি এবং তাদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে এক তরুণীকে মিথ্যা পরিচয়ের মাধ্যমে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তুলে এনে পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে মেয়েটিকে হস্তান্তর করলেও, তার বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
প্রথমে সীমিত পরিসরে শুরু হলেও ধীরে ধীরে সুমন মাদক ব্যবসার বিস্তারে মনোনিবেশ করেন। স্থানীয় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ভোটার নিবন্ধন জালিয়াতির মাধ্যমেও বৈধ নাগরিক সনদ গ্রহণ করেন এবং হাতেম খাঁ এলাকার ৩৮০ নম্বর বাড়িকে নিজের স্থায়ীয় ঠিকানা হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন।
সুমনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি মাদক ব্যবসার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যার হুমকি দিতেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিতেন। একসময় আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ জগতে প্রভাব বিস্তার করলেও, বর্তমানে তিনি দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানায় আশ্রয় নিয়ে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ একটি চক্রের ছত্রছায়ায় রয়েছে।
বর্তমানে সুমন দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা থেকে সক্রিয়ভাবে মাদক সাম্রাজ্য পরিচালনা করছেন বচলমনা যায়। সেখানে তাকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী রিপন, মিলন এবং তাজ। মাদকের পাশাপাশি তিনি অর্থনৈতিক ব্ল্যাকমেলের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায় এবং জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করেও বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের একাংশ মনে করছেন, ওবাইদুল ইসলাম সুমনের মতো একজন অপরাধী কেবল রাজনৈতিক ছত্রছায়া এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেই এতদূর আসতে পেরেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।