বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে এমন তামাশা, এরকম প্রহসন এর আগে দেশে দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের বিল্পবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদদের শাহাদাত বরণের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকে ৫৩ বছর পরে মানুষের এই বিজয়কে বর্তমান সরকার এবং সরকারি দল এটাকে পরাজয়ে পর্যবসিত করছে।
তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে অঙ্গীকার ছিল। সাম্য মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, আজকে দেশকে পুরো বিপরীত দিকে নিয়ে গেছে। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে পাকিস্তানরা জনগণের ভোটের মর্যাদা দেয়নি বলে, আমাদের নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। গোটা দেশকে তারা পাকিস্তানি জামানার মতোন এক দেশে দুই সমাজ, দুই অর্থনীতি কায়েম করেছে।
বামপন্থী এই নেতা বলেন, আজকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস যখন পালন হচ্ছে, তখন সরকার ১৪ ও ১৮ সালের মতো আরেকটা ভাগ বাটোয়ারা ও নীলনকশার নির্বাচনের পায়তারা করছে। ইতোমধ্যে মানুষ নির্বাচনের এই অপতৎপরতাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বর্জন করেছে।
নির্বাচন সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই নির্বাচন সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে মাঠের বাইরে রেখে, সরকার ও তার মিত্রদের নিয়ে যে নির্বাচন করছে, এটিকে নির্বাচন হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, মানুষ এটাকে কেউ বলেছেন- বানরের পিঠা ভাগ, কেউ বলেছেন এটা ডামি নির্বাচন, কেউ এটাকে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল বলে আখ্যায়িত করেছেন। মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে এমন তামাশা, এরকম প্রহসন এর আগে দেশে দেখা যায়নি। মানুষ এটাকে প্রত্যাখ্যান ও বর্জন করেছে। রাজপথে বিরোধী দলগুলো ঐক্য তৈরি করেছে।
সাইফুল হক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মানুষের শপথ হবে মুক্তিযুদ্ধের যে ভিশন ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদার, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের মধ্য দিয়ে আরও একবার আমাদের গণতন্ত্রকে আমরা রক্ষা করব। আমাদের ভোটাধিকারকে প্রতিষ্ঠা করব। বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার দিকে হাঁটবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মতো আরেকটি গণজাগরণের মধ্য দিয়ে আমরা সব স্বেচ্ছাচারকে বিদায় দিব। একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধ রাষ্ট্র ও সমাজ আমরা কায়েম করব। আজকের এ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীকে ডাক দেই। চলুন আরেকটা গণজাগরণ গড়ে তুলি। আরেকটা গণ অভ্যুত্থানের পথে এই চরম বেপরোয়া, দম্ভ, অহমিকার সরকার ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেশকে রক্ষা করি।