নুরুল আহমেদ রনি : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বা বিয়ে করে নারীদের কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া, এরপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো—এমন ভয়ংকর প্রতারণাকে নিজের ‘পেশা’তে রূপ দিয়েছেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামের মো. মহসিন।
ভুক্তভোগী সুমি আক্তার (ছদ্মনাম) জানান, ২০২২ সালের ২০ মার্চ, পারিবারিকভাবে ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহরে তার সঙ্গে মহসিনের বিয়ে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই জানা যায়, মহসিনের আরও দুই স্ত্রী রয়েছে। একজন স্ত্রী সুমাইয়াকে সে নিজেই ঘরে এনে তোলে। অতীত মেনে নিয়েই সংসার চালাতে থাকেন সুমি।
এরপর শুরু হয় প্রতারণা ও নির্যাতনের ধাপ। প্রথমে ব্যবসার কথা বলে সুমির কাছ থেকে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা নেয় মহসিন। কিছুদিন পর আবার টাকার জন্য চাপ দিলে, সুমি বাবার বাড়ি থেকে আনা প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণালংকার দিয়ে দেন তার কথায় বিশ্বাস করে। সেই স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা তুলে নেয় মহসিন।
পরে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মহসিন ও তার অপর স্ত্রী সুমাইয়া মিলে সুমির ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় সুমির পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩)-এর ১১(গ) ধারায় একটি মামলা করে। মামলাটি এখনো বিচারাধীন।
এরই মাঝে গত ৭ মার্চ ২০২৫ রাত ৮টার দিকে, সুমি তার বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে রাস্তায় একা পেয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রাণনাশ ও অপহরণের হুমকি দেয় মহসিন। এই ঘটনায়ল সুমি কুমিল্লা কোতয়ালী থানায়জিডি করেন। দ্রুত বিচারের আশায় সদর কোর্টে আরেকটি মামলা করেন ভুক্তভোগী সুমি( ছদ্ননাম) মামলা নম্বর: ৭০/২৫।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক না শর্তে জানান, মহসিন ছয়টিরও বেশি বিয়ে করেছেন। তার বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার অভিযোগে দু’টি মামলায় সাজাও হয়েছে। এক স্ত্রী সন্তানসহ তালাক দিয়ে নিস্তার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বর্তমানে সুমি তার বাবার বাড়িতে তিন বছর ধরে অবস্থান করছেন। তার গর্ভে জন্ম নেওয়া একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
তিনি বলেন,
“প্রতারক মহসিনের মতো মানুষদের দ্রুত বিচার না হলে আরও অনেক নারী এভাবে প্রতারিত ও নির্যাতনের শিকার হবে। আমি সরকারের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।