লন্ডন প্রতিনিধি : যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে বাংলাদেশের ৫৫তম মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের অনারারি কনসাল ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই-কে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ত্যাগ ও চেতনার কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। আলোচনায় বলা হয়, স্বাধীনতা কোনো সাধারণ অর্জন নয়—এটি মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য এক মহামূল্যবান আমানত।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—স্বাধীনতা মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত এক অনন্য নিয়ামত। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনেও স্বাধীনতা হারানো ও পুনরুদ্ধারের শিক্ষা বিদ্যমান। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হিজরত ও পরবর্তীতে মক্কা বিজয়ের মধ্য দিয়ে ইসলামের ইতিহাসে স্বাধীনতার তাৎপর্য সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ১৭৫৭ সালে স্বাধীনতা হারালেও দীর্ঘ প্রায় দুই শতাব্দীর সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে। এই স্বাধীনতা রক্ষা ও সার্বভৌমত্ব সংহত করার দায়িত্ব আজ নতুন প্রজন্মের ওপর ন্যস্ত।
পবিত্র কুরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তারা বলেন,
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরই সাহায্য করেন, যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে।” (সূরা হাজ্জ: ৪০)
মহান বিজয় দিবসে বক্তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদকে। বিশেষভাবে স্মরণ করা হয় সেইসব বীর সেনাসদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের, যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত থেকেও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্কটল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের অনারারি কনসাল হিসেবে ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই’র অবদান তুলে ধরে বক্তারা বলেন, প্রবাসে থেকেও তিনি বাংলাদেশের মর্যাদা, ভাবমূর্তি ও স্বার্থ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
শেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে ন্যায়, ইনসাফ, মানবতা ও ঐক্যের পথে চলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।