1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

শাকিলকে খুন করেন পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রী-ছোটভাই

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২ জুন, ২০২১
  • ১৭৭ বার দেখা হয়েছে

বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : পাবনার ঈশ্বরদীর কাপড় ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ ওরফে ভোলা (৩৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ছোটভাই তার ভাবির মিম খাতুন (২০) সঙ্গে পরকীয়া করে এককভাবে পারিবারিক সম্পত্তি ভোগের লোভে বড়ভাই শাকিলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন ছোটভাই সাব্বির (২২)।

বুধবার (২ জুন) পাবনা জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শাকিল হত্যার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার (এসপি) মহিবুল ইসলাম খান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শাকিল হত্যায় জড়িত স্ত্রী মিম খাতুন এবং তার আপন ছোটভাই সাব্বিরকে সন্দেহজনকভাবে ঘটনার রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ এবং ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ হাদিউল ইসলামসহ পুলিশের একটি চৌকস টিম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে থানায় জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। ইতোমধ্যে নিহত শাকিলের স্ত্রী মিম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সাব্বিরকে চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, বিয়ের পর থেকেই শাকিলের স্ত্রী মিমের সঙ্গে ছোটভাই সাব্বিরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শাকিলের সঙ্গে বাবা-মা ও একমাত্র ছোটভাইয়ের জমিজমা ও পুকুরে মাছচাষের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ ছিল। স্ত্রী মিম ও সাব্বিরের মধ্যকার পরকীয়ার বিষয়টিও শাকিল আঁচ করতে পারেন। যে কারণে একই বাড়িতে অবস্থান করেও আলাদাভাবে সংসার শুরু করেন শাকিল। বিষয়টি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে শাকিল গত ১৯ মে স্ত্রীকে নিয়ে ঈশ্বরদী শহরের রূপনগর কলেজপাড়া মহল্লায় জনৈক আহসান হাবিবের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন। কিন্তু সাব্বির গোপনে একটি মোবাইল ফোন মীমকে দেন, যা মিম লুকিয়ে রেখে শুধু সাব্বিরের সঙ্গে গোপনে কথা বলতেন এবং বাড়ি ফাঁকা পেলে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতেন।

এক পর্যায়ে স্ত্রী মিম ও ছোটভাই সাব্বির শাকিলের প্রতি চরম ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৭ মে রাতে মিম পানির সঙ্গে তিনটি ঘুমের ট্যাবলেট গুঁড়া করে মিশিয়ে রাখেন। সে পানি খেয়ে পরের দিন ২৮ মে শাকিল সারাদিন ঘুমিয়ে থাকেন। সন্ধ্যার পরে সাব্বির গোপনে শাকিলের বাসায় যান। শাকিল তখনো ঘুমের ওষুধের প্রভাবে ঘুমাচ্ছিলেন। পরে তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শোবার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাকিলের নাকে-মুখে সোফা সেটের কুশন (বালিশ) নিয়ে চাপা দেন। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান শাকিল।

পুলিশ জানায়, আসামি মিম ও সাব্বির ভিকটিম শাকিলকে হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির ওড়না দিয়ে মিমের দুই পা, শাকিলের পাঞ্জাবি দিয়ে দুই হাত এবং পরিহিত ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে চলে যান। এসময় সাব্বির মিমের সঙ্গে গোপনে কথা বলার জন্য তাকে দেয়া মোবাইল ফোনটি নিয়ে যান।

সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) শেখ মো. জিন্নাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবীর উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী বাজারের এক কাপড় ব্যবসায়ী ও মুলাডুলি ইউনিয়নের প্রতিরাজপুরের দুবলিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে শাকিলের লাশ ভাড়া বাসা হতে উদ্ধার করা হয়। ওইসময় শাকিলের স্ত্রী মিম জানিয়েছিলেন, দুইজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাসায় এসে ডাকাডাকি করলে তিনি ঘরের দরজা খুলে দেন। অজ্ঞাতনামারা জোর করে ঘরের ভেতর ঢুকে মিমকে দুই থাপ্পড় মারেন এবং বুকের নিচে লাথি মারলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।

রাত ৯টার দিকে মিম জ্ঞান ফিরে দেখতে পান তার হাত, পা ও মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা এবং ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পা দিয়ে দরজায় লাথি মেরে শব্দ করতে থাকেন। রাত ১০টার দিকে বাড়ির মালিকের স্ত্রী নাজমা বেগম শব্দ শুনে শাকিলের দরজার বাইরে থেকে ছিটকিনি খুলে দেন। পরে আত্মীয়-স্বজনকে ঘটনা জানালে তারা ঘটনাস্থলে এসে শাকিলকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বজনরা ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে খবর দেন।

এ ঘটনায় নিহত শাকিলের মামা কোরবান আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com