1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
খেলাধুলাকে তৃনমুল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে চাই : আমিনুল হক ফরিদপুর জেলা পুলিশের ক্ললেস হত্যা মামলার আসামি ও ব্যাটারি উদ্ধার সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিএনপি’র চেয়ারম্যান তারেক রহমান কতৃক রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ গাইবান্ধায় প্রিপেইড মিটার গ্রাহকদের চরম আপত্তির মুখেও নির্বাহী প্রকৌশলীরা অতি উৎসাহী! পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাঁশ হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান-উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ঠাকুরগাঁওয়ে বিসিকের ৫ দিনের নারী শিল্প উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের পুরাতন মালিক মালিকানা ফেরত নিতে চান টাঙ্গাইলে কালিহাতী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে উৎসবমুখর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত আনসার বাহিনীকে আরো প্রশিক্ষিত করে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুমিল্লা জজ কোর্টের নতুন ভিপি কৌশলী হলেন দাউদকান্দির জাকির হোসেন পাটোয়ারী

‘গর্ভে ৭ মাসের সন্তান, হেঁটে-রিকশায় দাউদকান্দি থেকে আগরতলা যাই’

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২
  • ৩৬২ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি(দাউদ কান্দি)ঃ  ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি বাঙালি মা-বোনেরাও সম্মুখসমরে অংশগ্রহণসহ নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। অনেক মা স্বেচ্ছায় তার আদরের পুত্রকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন। অনেক গৃহবধূ তাঁর স্বামীকে যুদ্ধ করতে পাঠিয়েছেন, কেউ কেউ স্বামীকে নানাভাবে সাহস-উৎসাহ যুগিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে পরোক্ষভাবে অবদান রাখা এমনই একজন নারী মাহমুদা আক্তার। ১৯৭১ সালে মাহমুদা আক্তার ছিলেন সদ্য বিবাহিতা। গর্ভে সন্তান থাকার পরও স্বামী তৎকালীন ক্যাপ্টেন সুবিদ আলী ভূঁইয়া [কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও মেঘনা) আসনের টানা তৃতীয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) মো. সুবিদ আলী ভূঁইয়া] কে বারবার নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পাঠিয়েছেন স্বাধীনতার জন্য। ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় থেকে সময় সুযোগ করে স্বামীকে যুদ্ধে নিয়োজিত থাকতে সাহস যুগিয়েছেন বারবার।

সাক্ষাৎকারে মাহমুদা আক্তার জানান,
‘জুলাই মাসে পাকিস্তানি আর্মি ও রাজাকাররা আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। কয়েকদিন পর লোক মারফত তখনকার ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া এ খবর জানতে পারেন। এরপর তিনি আমাদের পাশের গ্রাম ঝাউতলীর এক ছাত্র একরামকে [আকরাম দেশ স্বাধীন হলে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং মেজর হন] চিঠি দিয়ে পাঠান- আমি যেন আকরামের সঙ্গে আগরতলা যাই। বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার পর আমরা তখন বড় বোনোর শ্বশুড় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। সেখানেই চিঠি নিয়ে আসলো আকরাম। আমি তখন ৭ মাসের গর্ভবতী। মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন তখন আমার পেটে [মোহাম্মদ আলী বর্তমানে দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান]। আমার পরিবার চিন্তিত হয়ে পড়ে যে আমাকে এই অবস্থায় যেতে দিবে কিনা। জীবনের ঝুঁকি থাকার পরও আমি যেতে রাজি হলাম। কারণ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়াকে পাশে থেকে সাহস যোগানো সেই মূহূর্তে খুবই জরুরি ছিল।
আমি যেদিন দাউদকান্দি খানেবাড়ির বাড়ি থেকে বের হই- বাবা আমার হাতে ৫ হাজার দেন। পথে চুরি-ডাকাতি হতে পারে এই আশঙ্কায় টাকাটা দুই ভাগে ভাগ করে দেন বাবা।মা বোরকা পরিয়ে দিয়ে খুব কাঁদছিলেন।

হেঁটে-রিকশায়-নৌকায় দাউদকান্দি থেকে আগরতলা যাই। লম্বা পথ, কষ্টের সীমা নেই। পথে অনেক কষ্ট হয়। আল্লাহর মেহেরবানি ছিল যে পথে পাকিস্তানি আর্মির কোনো টহল বা চেকপোস্টে পড়ি নাই। হাঁটতাম আর আল্লাহকে ডাকতাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কংসনগরের একটি বাড়িতে একদিন অবস্থান নেই। ওই বাড়ির লোকজন খুব উপকার করেছিল। তখন আমার সঙ্গে যাওয়া আমার দেবর আবুল হোসেনের খুব জ্বর আসে। এরপর ঐ বাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় আমি, আমার দেবর ও একরাম সীমান্ত পার হই। সীমান্ত পার হওয়ার পর খুব বৃষ্টি শুরু হয়। এইদিকে ক্ষুধায় মরে যাই। কী খাবো? হাঁটছি বন-জঙ্গল আর অচেনা পথে। ক্ষুধার জ্বালায় কাঠাল কিনে খাই। শরণার্থীরা সীমান্ত পার হয়ে চাঁদের গাড়িতে করে আগরতলা যায়-কিন্তু সেদিন তুমুল বৃষ্টি হওয়ায় চাঁদের গাড়ি আসেনি। তাই শরণার্থী বহরের সঙ্গে পায়ে হেঁটে রওয়ানা হই। পথে কাঁদা, পেটে সন্তান- হাঁটাও খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ! তারপরও মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়েছে। এ ছাড়া কোনো উপায় তো ছিল না। প্রায় ১২ মাইল হাঁটার পর একটা জিপগাড়ি পেলাম। সেটাতে করে আগরতলা পৌঁছলাম।’

উল্লেখ্য, মাহমুদা আক্তারের স্বামী জেনারেল ভূঁইয়া বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম কাতারের একজন বীরযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তখনকার সেই তরুণ ক্যাপ্টেন ভূঁইয়া দেশ ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সারা দিয়ে পুরো নয় মাস জীবনবাজি রেখে বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম লড়াই ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক কুমিড়ার লড়াই তাঁর নেতৃত্বেই সংঘটিত হয়েছিল। যা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এই যুদ্ধে পাকিস্তানী কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল শাহপুর খান বখতিয়ার ও একজন লেফটেনেন্টসহ বিভিন্ন পদে ১৫২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
কুমিড়ার এই লড়াইটিই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ও মুখোমুখি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কুমিড়ার যুদ্ধের এই সাফল্য ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট। শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে ২৯ মার্চ ১৯৭১ সালে তাঁর নামে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের মদনাঘাটস্থ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ঘোষণাটি ছিল ‘যার যার অস্ত্র নিয়ে লালদীঘি ময়দানে ক্যাপ্টেন ভূঁইয়ার কাছে রিপোর্ট করুন’। সেই দিনের সেই ঘোষণা আর কুমিড়ার লড়াই আজ ইতিহাসের অংশ।

জেনারেল ভূঁইয়া ৩নং সেক্টরের তেলিয়াপাড়া, ধর্মগড়, মুকুন্দপুর, আশুগঞ্জের যুদ্ধেও অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। উল্লেখ্য, নয় মাসের যুদ্ধে বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মরতে মরতেই তিনি বেঁচে যান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে চট্টগ্রামে এবং পরে সিলেট অঞ্চলে মেজর সফিউল্লাহ নেতৃত্বে দেশ শত্রু মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধে লড়ে যান তিনি।চলবে…………..

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com